shono
Advertisement

খাঁচার গা ঘেঁষে ভেঙে পড়ল প্রাচীন গাছ, বরাতজোরে রক্ষা পেল আলিপুর চিড়িয়াখানার একাধিক পশু

কম করে ৫০টা গাছ সমূলে উপড়ে পড়েছে। The post খাঁচার গা ঘেঁষে ভেঙে পড়ল প্রাচীন গাছ, বরাতজোরে রক্ষা পেল আলিপুর চিড়িয়াখানার একাধিক পশু appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 10:30 PM May 21, 2020Updated: 10:30 PM May 21, 2020

ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: হরিণ-জেব্রাগুলোকে ঠেলেও ঘরে ঢোকানো যায়নি। আর দুর্যোগের রাতে ঠায় ঘুরে বেড়িয়েছে বাইরে। কুমিরের ঘরের আশপাশে বেশ ক’টা গাছের মোটা ডাল ঝুলছিল। সেসব ভেঙে জলে পড়লে আর রক্ষে ছিল না। বেয়ে উঠে এলে তো আরেক বিপদ! সেই ভয়ে দু‘চোখের পাতা এক করতে পারেননি চিড়িয়াখানার কর্মীরা। কয়েকটা দলে ভাগ হয়ে হাতে করাত নিয়ে ঘাপটি মেরে বসেছিলেন নিরাপদ আশ্রয়ে। যখন ভোরের আলো ফুটল, চারিদিকে তাণ্ডবের ছবি দেখে মাথায় তখন আরেক চিন্তা। খাঁচার পশু–পাখিগুলো অক্ষত আছে তো? শিরিষ, বট, সেগুন মিলিয়ে কম করে ৫০টা গাছ সমূলে উপড়ে পড়েছে। একটাও যদি খাঁচার উপর পড়ে থাকে!

Advertisement

দ্রুত অধিকর্তাকে খবর। তাঁকে সঙ্গে নিয়েই পড়িমড়ি করে সকাল সকাল গোটা চিড়িয়াখানা চষে ফেলেছেন কর্মীরা। সবটা দেখে কার্যত ঘাম দিয়ে জ্বর ছেড়েছে। গাছ যা পড়েছে সব ক’টা খাঁচার গা ঘেঁষে। ধ্বংস হয়েছে আলিপুর চিড়িয়াখানার বনানীর অনেকটা অংশ। পুরনো ক’টা পাঁচিলের সামান্য অংশবিশেষ ভেঙেছে মাত্র। ক্ষতি বলতে এটুকুই।

[ আরও পড়ুন: রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত আরও ৬, আমফানের ধাক্কায় বাড়ছে সংক্রমণের আশঙ্কা ]

বৃহস্পতিবার সকালে পশুপাখি সকলকে অক্ষত, সুস্থ দেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন অধিকর্তা আশিস সামন্ত। তাঁর কথায়, “বাঘের খাঁচার সামনে পুরনো বট গাছ ছিল। সাদা ময়ূরের খাঁচার কাছেই ছিল আরও একটা বিরাট গাছ। হরিণের খাঁচার সামনেও ছিল একটা বট গাছ। সব গাছ ক’টা ভেঙে পড়েছে। জেব্রা, হরিণগুলোও বাইরে বাইরে ঘুরেছে রাতভর। দুশ্চিন্তায় ছিলাম। সকালে গিয়ে দেখি খাঁচার ফাঁকে ফাঁকে গাছগুলো পড়েছে। তা না হলে অনেক পশুপাখি জখম হত।” একইসঙ্গে জানিয়েছেন, “কম করে ৯০–১০০ বছরের পুরনো সব বড় বড় গাছ। কোনওটা কোনওটা হয়তো একেবারে চিড়িয়াখানার বয়সই। সবুজ অনেকটা নষ্ট হয়েছে।”

আয়লার সময় আরেকটা বড় বিপদের মুখে পড়তে হয়েছিল কর্তৃপক্ষকে। সেসময় এভাবে গাছ ভেঙে পড়েই পশুপাখিদের ঘরের কাছে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। যার জেরে একবেলা না খেয়ে কাটাতে হয়েছিল অনেককে। এবার সেসব হয়নি। সকালেই রাস্তা বের করার মতো দ্রুত কিছু গাছ কেটে প্রত্যেকের ঘরে খাবার পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

[ আরও পড়ুন: আমফানের দাপটে ভাসছে বইপাড়া, লক্ষাধিক টাকার ক্ষতিতে মাথায় হাত ব্যবসায়ীদের ]

ঝড়ের তাণ্ডবে প্রবল ভয় পেয়ে গিয়েছিল পাখিরা। প্রত্যেকটি পাখির খাঁচা থেকে রাতভর চিৎকারের আওয়াজ মিলেছে। সকালেও চেঁচামেচি করেছে। চিড়িয়াখানার কর্মী, অধিকর্তা যাঁদের রোজ তারা দেখে, সকালে তাঁদের দেখে তবে নিশ্চিন্ত। নিয়মমতো খাবারও খেয়েছে। সাদা একটা ময়ূর তো পেখম মেলে ঘুরেও নিয়েছে খানিক।

দুর্যোগের সংকেত পেয়েই বুধবার সকাল সকাল বাঘ-সিংহদের ঘরে ঢুকিয়ে দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। চিতা, শিম্পাঞ্জি, হাতিগুলোকেও যার যার ঘরে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। জিরাফ এমনিতেই একটু ভীতু। তাতে ১১ জনের সংসার। সবাইকে নিয়ে নিজেরাই ঘরে ঢুকে গিয়েছে একটু ঝোড়ো হাওয়া দিতেই। কিন্তু কিছুতেই ঘরে ঢোকানো যায়নি জেব্রা আর হরিণের দলকে। রাতভর বাইরে দাঁড়িয়ে দুর্যোগ দেখেছে তারা। গাছ পড়ার সময় নিজেরাই বেঁচেছে লাফিয়ে সরে গিয়ে। ঘরে যারা আছে, তাদের এখনই কাউকে ঘর থেকে বের করা হবে না। দু’-একদিন বাদে আকাশ একেবারে রোদ ঝলমলে হলে চারপাশ সাফ-সুতরো করে নিয়ে তবে তাদের বাইরে আনা হবে। সঙ্গে চলবে টুকটাক মেরামতের কাজ।

The post খাঁচার গা ঘেঁষে ভেঙে পড়ল প্রাচীন গাছ, বরাতজোরে রক্ষা পেল আলিপুর চিড়িয়াখানার একাধিক পশু appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement