সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: দুবছর পর ফিরেছেন নিজের গড়ে। একেবারে উৎসবের মেজাজে অনুব্রত-বরণ বোলপুরে। মঙ্গলের সকালটা যেন মঙ্গলময় হয়ে উঠল লালমাটি বীরভূমে। এদিন সকাল ৯টার আগেই বোলপুরে পা রাখেন অনুব্রত মণ্ডল ও তাঁর মেয়ে সুকন্যা। পরনে সাদা পাঞ্জাবি-পাজামা। তাঁদের স্বাগত জানাতে সকাল থেকে নিচুপট্টির বাড়ি, পার্টি অফিসে দলীয় নেতা-কর্মীর ভিড়। শুধু তাই নয়, নিরাপত্তাও বাড়ানো হয়েছে।
অনুব্রতর নিচুপট্টির বাড়ির সামনে নিরাপত্তা। ছবি: দেব গোস্বামী।
এছাড়া মহিলারা শঙ্খ হাতে, উলু দিয়ে স্বাগত জানান বীরভূমের দাপুটে তৃণমূল নেতাকে। হাসিমুখে 'কেষ্টদা'ও তাঁদের সকলের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। আজ দুপুরে বোলপুরে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকে দেখা যেতে পারে অনুব্রতকে।
জেলা সভাপতিকে স্বাগত জানাতে উৎসবের মেজাজে মহিলারা। ছবি: দেব গোস্বামী।
গরু পাচার মামলায় গত বৃহস্পতিবার ইডির মামলায় জামিন পান বীরভূম জেলার তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল(Anubrata Mondal)। তবে বেল বন্ড সংক্রান্ত কাগজপত্রের পরীক্ষায় দেরি হওয়ায় শেষমেশ তিহাড় জেল থেকে তাঁর বেরতে সোমবার হয়ে যায়। জেল থেকে বেরিয়ে মেয়ে সুকন্য়ার হাত ধরেন অনুব্রত। বলেন, ''দিদির (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) আশীর্বাদে ভালো আছি।'' ওদিন রাতের বিমানেই দিল্লি থেকে রওনা দেন অনুব্রত ও মেয়ে সুকন্যা। তাঁরও কয়েকদিন আগেই জামিন হয়েছে। মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছন তাঁরা। সেখানেও অনুব্রতদের স্বাগত জানাতে ভোরবেলা ভিড় জমান দলীয় সমর্থকরা।
কলকাতা বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে সড়কপথে অনুব্রত ও সুকন্যা রওনা দেন বোলপুরের দিকে। মাঝে বর্ধমান-সিউড়ি ২বি জাতীয় সড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় আউশগ্রাম-ভাতারের শিবদা মোড়ে অনুব্রতর সঙ্গে দেখা করেন আউশগ্রাম ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তাপস চট্টোপাধ্যায়-সহ দলীয় কর্মীরা। 'কেষ্টদা' তাঁদের জিজ্ঞাসা করেন, "তোরা ভালো আছিস তো?'' এর পর গুসকরা নদী পটি এলাকায় মিনিট দেড়েকের জন্য দাঁড়িয়েছিল তাঁদের গাড়ি। গুসকরার তৃণমূল কর্মীরা সেখানে আগে থেকেই হাজির ছিলেন। তাঁদের দেখে অনুব্রতর মুখে চওড়া হাসি দেখা গেল। সেখান থেকে প্রায় ২৫ টি গাড়ির কনভয় ছিল তাঁর সঙ্গে।
আউশগ্রামের কাছে অনুব্রতর গাড়িতে পুষ্পবৃষ্টি। সমর্থকদের দিকে হাত নাড়লেন কেষ্টও। নিজস্ব চিত্র।
বর্ধমানে অনুব্রতর গাড়ি ঢুকতেই প্রায় উৎসবের চেহারাটা স্পষ্ট হয়ে যায়। আসলে বীরভূমের পাশাপাশি পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম, কেতুগ্রাম, মঙ্গলকোটে ঘাসফুল শিবিরের সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে দক্ষতার সঙ্গে সামলেছেন তিনি। এসব এলাকায় বহু অনুগামী রয়েছে তাঁর। মঙ্গলবার সকালে নেতা ফিরছেন শুনে তাঁরা কেউ বাড়িতে থাকেননি। সকলে ছুটে এসেছেন দেখা করতে। সবমিলিয়ে কার্যত রাজার মতোই তিনি ফিরলেন নিজের 'সাম্রাজ্য়ে'।