অর্ণব আইচ: তাদের কেউ বা ছিল বাদামি সাদা, কারও বা বাদামির উপর কালো ছিট। চার ভাইবোন ঘুরে বেড়াত রাস্তায়। বৃহস্পতিবার বিকেলে রাস্তার উপর খেলা করাই হল কাল। বেপরোয়া অ্যাপ ক্যাব এসে পিষে দিল চারটি কুকুরশাবককে। ঘটনাটিকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল মধ্য কলকাতার পোস্তা এলাকায়। গাড়ি চাপা দিয়ে ‘কুকুর খুন’-এর অভিযোগে গ্রেপ্তার হলেন অ্যাপ ক্যাব চালক। এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ঘটনার একদিন পরও মা কুকুরটি তার শাবকদের খুঁজে চলেছে। সে জানে না, নিজের ভাষায় করুণ সুরে বারবার ডাকলেও আর ফিরে আসবে না তার চার ছেলেমেয়ে।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত ব্যক্তির নাম সমীর সর্দার। ঘটনাটি ঘটেছে মধ্য কলকাতার পোস্তা এলাকার কে কে টেগোর স্ট্রিটে। এখানেই মাসখানেক আগে ওই রাস্তায় জন্ম নেয় চারটি কুকুরশাবক। তাদের মধ্যে দু’টি পুরুষ, দু’টি মেয়ে। তাদের একেকজনকে এলাকার বাসিন্দারা একেকটি নামে ডাকতেন। আদর করে তাদের খেতে দিতেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার বিকেলেই ঘটে ঘটনাটি। সমীর তাঁর অ্যাপ ক্যাব নিয়ে যাত্রী পৌঁছতে গিয়েছিলেন পোস্তায়। ফেরার পথে গাড়ির গতি ছিল বেশি। একটি অপরিসর রাস্তা দিয়ে বের হয়ে কে কে টেগোর স্ট্রিট পড়ার সময়ই নিয়ন্ত্রণ হারায় গাড়িটি। রাস্তার উপরই খেলছিল সারমেয় শাবকগুলি। সমীরের গাড়িটি তাদের চারজনকেই একসঙ্গে পিষে দেয়।
[আরও পড়ুন: প্রশ্নপত্রের খসড়া আগাম জানতেন কুন্তল, পার্থর সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে মিলল তথ্য]
তাদের চিৎকার শুনে দৌড়ে আসেন এলাকার বাসিন্দারা। দেখেন, রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে রয়েছে চারটি শাবক। রাস্তা ভেসে যাচ্ছে রক্তে। বাসিন্দারা জল দিয়ে তাদের শুশ্রূষা করার চেষ্টা করেন। কিন্তু মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে চার ভাইবোনই। ওই গাড়িটিকে ঘিরে শুরু হয় বিক্ষোভ। বের করে নিয়ে আসা হয় অ্যাপ ক্যাব চালককে। কিছুক্ষণের মধ্যেই খবর পৌঁছে যায় পোস্তা থানায়। পুলিশের টিম এসে গণধোলাই শুরু হওয়ার আগেই চালককে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
[আরও পড়ুন: সীমান্তে চিনের আচরণ অপ্রত্যাশিত! ‘চিকেন নেক’ রক্ষার্থে শিলিগুড়ি করিডরে কড়া নজর সেনার]
চারটি শাবকের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ ময়নাতদন্তে পাঠায়। এর ফলে উত্তেজনা আর বাড়েনি। পুলিশের পক্ষে স্বতঃপ্রণোদিতভাবে পোস্তা থানায় পশুক্লেশ ও বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর অভিযোগ দায়ের হয়। শুক্রবার ধৃতকে ব্যাংকশাল আদালতে তোলা হয়। যেহেতু জামিনযোগ্য অপরাধ, তাই ধৃত চালকের জামিন মঞ্জুর করেন বিচারক।