সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: সন্তানের অমঙ্গল হবে। ক্ষতি হবে সংসারের। এসব নানা বিষয় নিয়ে ভয় দেখিয়ে বধূর খোলামেলা ছবি চেয়ে টাকা দাবি করা হয়! এমনকী একাধিকবার কুপ্রস্তাব দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। আর এমন প্রস্তাবে রাজি না হওয়াতেই চরম বিপাকে পড়তে হল এক পরিবারকে। বধূর খোলামেলা ছবি ছড়িয়ে দেওয়া হল সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেই অভিযোগেই গ্রেপ্তার করা হল এক জ্যোতিষীকে।
বৃহস্পতিবার রাতে অভিযুক্ত জ্যোতিষীকে গ্রেপ্তার করে পুরুলিয়া সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। শুক্রবার পুরুলিয়া আদালতে পেশ করা হয় তাকে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত জ্যোতিষীর নাম মনসারাম প্রামাণিক। তাঁর বাড়ি কেন্দা থানার রঘুডি গ্রামে। অভিযোগ, এই জ্যোতিষী স্থানীয় এলাকায় ওঝা, ঝাড়ফুঁকেরও কাজও করত। মন্ত্রবলে মানুষের মনস্কামনা পূরণ করে দেয় বলে প্রচার চালিয়ে ডেরায় ভিড় জমাতেও সফল হন তিনি। কিন্তু এসবের আড়ালে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিতেন তিনি।
[আরও পড়ুন: ‘মোদির নিরাপত্তায় গলদ বিরলতম ঘটনা, লজ্জায় পড়তে পারে দেশ’, সুপ্রিম কোর্টে বলল কেন্দ্র]
অভিযোগ, পুরুলিয়ার নিতুড়িয়া থানা এলাকার এক বধূ প্রায় বছর তিনেক আগে থেকে তাঁর স্বামীকে নিয়ে ওই জ্যোতিষীর কাছে যাতায়াত করতেন। সেই আসা-যাওয়া থেকেই ওই জ্যোতিষী বধূর মোবাইল নম্বর নিয়েছিলেন। তারপর বছরখানেক আগে সন্তান ও সংসারের অমঙ্গলের ভয় দেখিয়ে ওই বধূকে খোলামেলা ছবি পাঠাতে বলেন জ্যোতিষী। আর তারপর থেকেই ৫০ হাজার টাকা দাবি করতে থাকে বলে অভিযোগ। সেই সঙ্গে নানা কুপ্রস্তাবও দেন। কিন্তু সেই অর্থ দিতে অস্বীকার করেন মহিলা। কুপ্রস্তাবেও সাড়া না দেননি। আর তাতেই মেজাজ হারিয়ে বধূর খোলামেলা ছবি ভাইরাল করে দেন অভিযুক্ত। তবে ধৃত জ্যোতিষী এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেম।
এদিন পুরুলিয়া আদালতে তোলার পথে ধৃত জ্যোতিষী জানান, তিনি কোনও ছবি ভাইরাল করেননি। কোনও জ্যোতিষীর কাজও নাকি করেন না। চাষাবাদ করে সংসার চালান। সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ পেয়ে ধৃত জ্যোতিষীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। জ্যোতিষীর বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। তিনি যাঁদের ওই ছবি পাঠিয়েছেন, তাঁদেরও খোঁজখবর শুরু করেছে পুলিশ।