টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: একসঙ্গে ২৬টা হাতি ঘুরে বেড়াচ্ছে! সাতসকালে ঘুম ভেঙে এই দৃশ্য দেখে তন্দ্রা কেটে গিয়েছিল বাঁকুড়ার জয়পুরের জঙ্গল লাগোয়া এলাকার বাসিন্দাদের। খেতে ফসলগুলো সবে উঠেছে। ঘরে আনার আগে হাতির দলের তাণ্ডবেই না নষ্ট হয়ে যায়! এই চিন্তায় মুহূর্ত কাটছে তাঁদের। বনবিভাগের অবশ্য আশ্বাস, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
বেশ কয়েক মাস পর দলমার দাঁতালের দল এভাবে ঢুকে পড়েছে বাঁকুড়ায়। বনকর্মীরা জানাচ্ছেন, ভোররাতে পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে এরা বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর রেঞ্জের ত্রিবঙ্ক ও বেলশুলিয়া এলাকায় প্রবেশ করেছে। দলটিতে পূর্ণবয়স্ক হাতি ছাড়াও রয়েছে বেশ কয়েকটি শাবকও। এই সময়ে জঙ্গল লাগোয়া কৃষিজমিতে বিভিন্ন ফসল ওঠে। সেসব খাবারের সন্ধানেই মূলত হাতির পাল ঢুকে পড়ে। তবে একসঙ্গে এতগুলো হাতির প্রবেশ এবার চিন্তা বেশ বাড়িয়ে তুলেছে। এমনিতেই লকডাউনের জেরে কৃষিকাজে ক্ষতি হয়েছে। লকডাউন ধীরে ধীরে শিথিল হওয়ায় যদি বা কিছু ফসল ফলানো সম্ভব হয়েছে, তাও যদি হাতির তাণ্ডবে নষ্ট হয়ে যায়, সমূহ বিপদ। এই ভেবেই ঘুম উড়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।
[আরও পড়ুন: স্কুলের ফি মকুবের দাবিতে প্রতিবাদ, মহেশতলায় পথ অবরোধ অভিভাবকদের]
বনবিভাগের কর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যাচ্ছে, আসলে এই দলমার দল প্রতি বছরই এ সময়ে বাংলার বিভিন্ন বনাঞ্চলে ঢুকে পড়ে। ফসলের খেত থেকে লোকালয়ে হানা – নানা সময়ে এদের দাপটে তটস্থ থাকেন মানুষজন। প্রাণহানিও ঘটে।
কয়েক বছর আগে পর্যন্ত দলমার দল নির্দিষ্ট সময় পর আবার ফিরে যেত। কিন্তু ইদানিং তা আর হচ্ছে না। বনকর্মীরা জানাচ্ছেন, বাংলা বনাঞ্চল থেকে দলমায় ফিরে যাওয়ার পথে অনেক পাহাড়ের বুকে অনেক খনি তৈরি হয়েছে। সেখানে প্রায়শয়ই ছোটখাটো বিস্ফোরণ লেগে থাকে। তাতে আতঙ্কিত হাতির দল আর ফিরে যাচ্ছে না। পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া রেঞ্জেই থাকছে।
[আরও পড়ুন: পশ্চিমবঙ্গে পর্দাফাঁস নয়া জেএমবি মডিউলের, গ্রেপ্তার সালাউদ্দিন ঘনিষ্ঠ জঙ্গি]
বনদপ্তরের তৎপরতায় এতগুলো হাতি একসঙ্গে আগে প্রবেশ করতে পারেনি। তবে এবার ফের ঢুকে পড়েছে। আর তাতেই আতঙ্ক বেড়েছে স্থানীয়দের মধ্যে। শুধু খেতের ফল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কাই তো নয়। রয়েছে আরও নানা ভয়। তবে বিষ্ণুপুরের বন অধিকর্তা নীলরতন পান্ডা বলছেন, ”আমরা সতর্ক রয়েছি।”
The post বাঁকুড়ায় ঢুকে পড়ল ২৬টি দলমা হাতির দল, তাণ্ডবের আশঙ্কায় কাঁটা বাসিন্দারা appeared first on Sangbad Pratidin.