বিক্রম রায়, কোচবিহার: কীর্তনের অনুষ্ঠান নিমেষে বদলে গেল আতঙ্কে। প্রসাদ খেয়ে একে একে অসুস্থ হয়ে পড়লেন প্রায় ৮০ জন। কোচবিহারের (Cooch Behar) মাথাভাঙার ঘটনায় তাঁদের মধ্যে অন্তত ৬৫ জনকে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করতে হয়। ঘটনাটি ঘটেছে মাথাভাঙা (Mathabhanga) ২ নম্বর ব্লকের রাশিডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার দেওয়ারহাট গ্রামে। খাবারে বিষক্রিয়ার ফলে জ্বর, পেটের সমস্যা, মাথাযন্ত্রণা শুরু হয় কীর্তনে উপস্থিত ভক্তদের। সেই সমস্যায় একের পর এক রোগী ভর্তি হতে থাকেন হাসপাতালে। রীতিমতো উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে স্বাস্থ্য দপ্তর।
এই পরিস্থিতি সামাল দিতে ওই গ্রামে শুক্রবার স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে তিনটি মেডিক্যাল টিম পাঠানো হয়েছিল। সারাদিন ধরে গ্রামবাসীদের বিভিন্ন শারীরিক পরিস্থিতির দিকে তারা নজর রাখেন। বিকেল পর্যন্ত মাথাভাঙা মহকুমা হাসপাতালে মোট ২৭ জন এবং ঘোকসাডাঙা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ৩৮ জনকে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করানো হয়েছে বলে খবর। কোচবিহারের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুকান্ত বিশ্বাস জানান, গ্রামের মধ্যে কীর্তনের (Kirtan) অনুষ্ঠানের পর খিচুড়ি এবং দইচিঁড়ে জাতীয় খাবার গ্রামবাসীদের প্রসাদ হিসেবে দেওয়া হয়েছিল। কোনওভাবে সেই খাবারে বিষক্রিয়া (Food poisoning) হয় এবং এতে অন্তত এত জন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে বলে জানান তিনি।
[আরও পড়ুন: হেরে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের শীর্ষস্থান দখলের স্বপ্ন অধরা আর্সেনালের, হার টটেনহ্যামেরও]
স্থানীয় বাসিন্দা বাণেশ্বর দেব সিংহ জানিয়েছেন, জমিতে নতুন ফসল ওঠার উপলক্ষে তিনি নিজের বাড়িতে কীর্তনের অনুষ্ঠান করেছিলেন। সেই কীর্তনের পর প্রসাদ গ্রহণের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার রাতে কীর্তন শেষ হবার পর প্রসাদ হিসেবে খিচুড়ি, সবজি, দই, চিঁড়ে গ্রামবাসীদের খাওয়ানো হয়েছিল। তবে গভীর রাতের পর থেকে একে একে গ্রামবাসীরা অসুস্থ হতে থাকেন এবং কী কারণে এমনটা হল সেটা বুঝে উঠতে পারছেন না। অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অমর দেব সিংহ এবং অপু দেব সিংহ বলেন, হঠাৎ করে জ্বর, তার সঙ্গে পেটের সমস্যা ও মাথায় অসহ্য যন্ত্রণা শুরু হয়। বাধ্য হয়ে তাঁরা হাসপাতালে এসেছেন। প্রায় গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দা যাঁরা ওই প্রসাদ খেয়েছিলেন সবারই একই পরিস্থিতি। তার মধ্যে বহু শিশু এবং বৃদ্ধও রয়েছেন বলে খবর।