সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সচিবালয়ে প্রবেশের ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের উপর কড়াকড়ি মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকারের। নতুন করে অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড (স্বীকৃতিপত্র) ইস্যু করা হবে। সচিবালয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর এই সিদ্ধান্তের পর এমনটাই জানালেন ইউনুসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম। এই ঘটনায় নাশকতার আশঙ্কা করছে অন্তর্বর্তী সরকার। অগ্নিকাণ্ডের কিনারা করতে তদন্তে নেমেছে বিশেষ কমিটি।
আজ শনিবার বেলা এক্স হ্যান্ডেলে শফিকুল আলম জানান, 'গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার (কি পয়েন্ট ইন্সটেলশন-কেপিআই) নিরাপত্তা বিবেচনা করে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার সীমিত করা হয়েছে। সরকার দ্রুতই সাংবাদিকদের দেওয়া অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডগুলো পর্যালোচনা করবে। নতুন অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড ইস্যু করার জন্য দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো থেকে তথ্য অধিদপ্তরের (পিআইডি) মাধ্যমে নতুন আবেদন চাওয়া হবে।'
এদিকে, গতকাল শুক্রবার রাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দায়িত্বরত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মহম্মদ খোদা বখস চৌধুরীর বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানান, সচিবালয়ে প্রবেশের জন্য সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দেওয়া অস্থায়ী প্রবেশ পাস ছাড়া সব ধরনের অস্থায়ী (বেসরকারি ব্যক্তিদের) পাস বাতিল করেছে সরকার। এছাড়া সাংবাদিকদের দেওয়া অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড দিয়ে সচিবালয়ে প্রবেশধিকারও পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাতিল থাকে। যার অর্থ অ্যাক্রিডিটেশনধারী সাংবাদিক-সহ বাইরের কেউ আপাতত সচিবালয়ে প্রবেশ করতে পারবেন না। এখানে অনেকের প্রশ্ন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কি এবার নজরে সাংবাদিকরাও?
২৫ ডিসেম্বর বুধবার রাত ১টা ৫২ মিনিট নাগাদ সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে আগুন লাগে। খবর পেয়ে ১টা ৫৪ মিনিটে সেখানে পৌঁছয় দমকলবাহিনী ও পুলিশ। প্রথমে ৮টি ইঞ্জিন দিয়ে আগুন নেভানোর কাজ শুরু হয়। কিন্তু আগুন ক্রমশ ছড়িয়ে পড়তে থাকে। পরিস্থিতি বুঝে বাড়ানো হয় ইঞ্জিনের সংখ্যা। সব মিলিয়ে ১৯টি ইঞ্জিনের চেষ্টায় ছয় ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা নাগাদ নিয়ন্ত্রণে আসে লেলিহান শিখা। প্রথমে এই ঘটনায় ৫ থেকে ১১ জন সদস্য নিয়ে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু সেটি বাতিল করে ৮ সদস্যের নতুন কমিটি গঠন করেছে সরকার।
সূত্রের খবর, সচিবালয়ে আগুনে কয়েকটি মন্ত্রকের গুরুত্বপূর্ণ ফাইল পুড়ে গিয়েছে। নষ্ট হয়ে গিয়েছে নানা গোপন নথিও। নানা মহল থেকে এই অগ্নিকাণ্ডকে 'রহস্যময়' বলে সন্দেহ প্রকাশ করা হচ্ছে। সচিবালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বিধ্বংসী আগুন লাগায় নিরাপত্তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। প্রশাসনিক দপ্তরের পাশাপাশি ‘রহস্যময়’ আগুন লেগেছিল সচিব নিবাসেও। যা নিয়ে ক্রমেই জোরালো হচ্ছে জল্পনা। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গুরুত্বপূর্ণ নথি চাওয়ার পরই এই আগুন লাগায় ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছে বিএনপি।