সুকুমার সরকার, ঢাকা: চট্টগ্রামের নৌসেনা ঘাঁটিতে জঙ্গি হানার মামলায় ৫ জেহাদিকে মৃত্যুদণ্ড দিল বাংলাদেশ। বেশ কয়েকবছর ধরে চলা শুনানির পর বুধবার কুখ্যাত জঙ্গি সংগঠন জামাত-উল-মুজাহিদিনের (জেএমবি) পাঁচ সদস্যকে ফাঁসির সাজা দিয়েছে আদালত।
সাত বছর আগে ২০১৫ সালের ১৮ ডিসেম্বর জুম্মার নমাজের পর চট্টগ্রামে নৌবাহিনীর ঈশা খাঁ ঘাঁটির ভেতরের মসজিদে দু’দফা বোমা হামলা হয়। ওই সন্ত্রাসবাদী হামলায় দু’জন নিহত এবং অন্তত ১০৪ জন জখম হন। সেই মামলায় চট্টগ্রামের সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবদুল হালিম আজ বুধবার রায় ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় নেভাল প্রভোস্ট মার্শাল কমান্ডার এম আবু সাইদ বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী ও বিস্ফোরক আইনে নগরীর ইপিজেড থানায় মামলা করেন। অভিযোগপত্রে মোট ২৪ জনকে সাক্ষী করা হয়েছিল। ১৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আজকে আদালত এই রায় দিয়েছে। দোষী সাব্যস্তরা হল- নৌবাহিনীর প্রাক্তন সদস্য এম সাখাওয়াত হোসেন, আবদুল মান্নান ও রমজান আলী, বাবুল রহমান ওরফে রনি এবং জেএমবি সদস্য আবদুল গাফফার। এদের মধ্যে সাখাওয়াত হোসেন পলাতক। বাকিরা রায়ের সময় আদালতে উপস্থিত ছিল।
[আরও পড়ুন: কিছুতেই মিলছে না রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান, ফের রাষ্ট্রসংঘের দ্বারস্থ বাংলাদেশ]
উল্লেখ্য, ১৯৮৮ সালে শেখ আবদুর রহমান জেএমবি (JMB) প্রতিষ্ঠা করে। প্রতিষ্ঠার বছর দশেক পর ১৯৯৮ সালে সংগঠনটি দেশব্যাপী তাদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ শুরু করে। গ্রেপ্তারের পর জেএমবির শুরা কমিটির প্রধান সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাই, আধ্যাত্মিক নেতা শেখ আবদুর রহমান, অপারেশন কমান্ডার আতাউর রহমান সানি, খালেদ সাইফুল্লা-সহ শীর্ষ ছ’জনের ফাঁসি ২০০৭ সালের ৩০ মার্চ কার্যকর হওয়ার পর আত্মগোপনে যায় সংগঠনের অন্য নেতাকর্মীরা। মতাদর্শগত পার্থক্য ও নেতৃত্ব সংকটের কারণে ২০১৫ সালে জেএমবি থেকে একটি বড় অংশ বেরিয়ে গিয়ে নব্য জেএমবি নামে নতুন সংগঠন তৈরি করে।
নব্য জেএমবি ২০১৬ সালের ১ জুলাই ঢাকার হলি আর্টিজান রেস্তরাঁয় জঙ্গি হামলা চালায়। ওই ঘটনায় দেশি-বিদেশি ২০জনকে হত্যা করা হয়। এর সপ্তাহখানেক পর ৭ জুলাই শোলাকিয়ার ইদগাহে আরও একটি হামলা চালায় নব্য জেএমবি। এসব হামলার দায় আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (ISIS) স্বীকার করলেও একে ‘নব্য জেএমবি’ বা জেএমবির বিদ্রোহীর অংশগ্রহণ বলে বলছেন বাংলাদেশি গোয়েন্দারা।