সুকুমার রায়, ঢাকা: ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরে বদলে যায় বাংলাদেশের সরকার। নতুন উপদেষ্টারা ক্ষমতায় আসার পরে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মামলা করা হয়। এবার সেই মামলায় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিরপরাধ দাবি করে তাঁর মুক্তি চেয়েছেন সরকারি আইনজীবী আমির হোসেন। সোমবার ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ১-এর কাছে এই দাবি করেন তিনি।
জানা গিয়েছে, ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে প্যানেলের আলোচনার সময় তিনি এই দাবি করেন। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ছাত্র আন্দোলন দমনে তৎকালীন আওয়ামি লিগ সরকারের নির্দেশে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগে দায়ের করা হয়েছে। সেই মামলার বিচার হবে এই ট্রাইব্যুনালে।
এদিন ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনা-সহ তিন জন আসামির বিষয়ে আলোচনা করা হয়। শুনানির শেষে এক ব্রিফিংয়ে শেখ হাসিনার পক্ষে সরকার নিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন বলেন, 'শেখ হাসিনা নিরপরাধ। শেখ হাসিনা এবং আসাদুজ্জামান খান কামালের মুক্তি চাই।' তিনি আরও বলেন, 'শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে, সেগুলি সঠিক নয়। আমার মনে হয়, সাক্ষ্য-প্রমাণ যা এসেছে তাতে অভিযোগ প্রমাণ করা যায়নি।' তিনি আরও বলেন, 'যেহেতু অভিযোগ প্রমাণ হয়নি, তাই আমি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মুক্তি চাইছি।' এই মামলায় সরকারের তরফে ৫৪ জনকে সাক্ষী হিসেবে আনা হয়। তদন্তকারীরা ছাড়াও এই মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন দৈনিক আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমান এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তবে মামলার মূল দুই আসামি পলাতক থাকায় আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পাননি তাঁরা।
গত বছরের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় দেশজুড়ে ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে আওয়ামি সরকারের নির্দেশে হত্যার অভিযোগে ৮৩৭টি মামলা রেকর্ড হয়েছে। এর মধ্যে ৪৫টি মামলার বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলছে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন ফৌজদারি আদালতে পুলিশ ১৯টি হত্যা মামলার চার্জশিট জমা করেছে। হত্যা-সহ অন্যান্য গুরুতর অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলার বিচার সুষ্ঠুভাবে করতে আইন ও বিচার বিভাগের অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করেছে আইন মন্ত্রক।
