সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সোমবার বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে সেদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল। তারপরই হাসিনাকে দেশে ফেরাতে তোড়জোড় শুরু করে দিল ইউনুস সরকার। শীঘ্রই বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে প্রত্যর্পণের জন্য ভারতকে চিঠি পাঠাতে চলেছে তারা। এমনটাই জানিয়েছেন সেদেশের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।
সোমবার তিনটি অপরাধে হাসিনাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে ট্রাইবুনাল। ফাঁসির সাজা দেওয়ার পরেই দীর্ঘ বিবৃতি জারি করেছেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, "জনমত ছাড়াই গঠিত হওয়া সরকার এই ট্রাইবুনাল গঠন করেছে। তাই এই আদালতের কোনও বৈধতা নেই। যেভাবে ফাঁসির সাজা দেওয়া হয়েছে, সেটা আসলে ইউনুস সরকারের মৌলবাদীদের খুনে মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ। আসলে তাদের উদ্দেশ্য ছিল আওয়ামি লিগকে বলির পাঁঠা করে বাংলাদেশের বর্তমান সমস্যাগুলো থেকে নজর ঘুরিয়ে দেওয়া। এই রায় পক্ষপাতমূলক ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।"
হাসিনার বিরুদ্ধে এই রায়ের পরই প্রশ্ন উঠছে এবার ভারতের অবস্থান কী হবে? বিশেষজ্ঞদের মতে, জনমত ছাড়া গঠিত বাংলাদেশের নতুন সরকারের আবেদনকে ভারত মান্যতা দেবে কি না, তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে। শুধু তাই নয়, ২০১৩ সালে ভারত-বাংলাদেশের যে প্রত্যর্পণ চুক্তি হয়েছিল, সেখানে বলা হয়েছিল, রাজনৈতিক অপরাধে দোষী সাব্যস্ত কোনও ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রত্যর্পণ আবেদন খারিজ করার অধিকার দু'দেশেরই রয়েছে। সুতরাং ভারত যে চুক্তি অনুয়ায়ীই চলবে সেটা এক প্রকার স্পষ্ট বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
জুলাই অভ্যুত্থানে দেশছাড়া হওয়ার পর থেকে মহম্মদ ইউনুসের বাংলাদেশে অসংখ্য মামলা হয়েছে হাসিনার বিরুদ্ধে। গুরুতর মামলাগুলির মধ্যে রয়েছে জুলাই বিপ্লবী ছাত্রদের উপর গুলি চালানো তথা মানবতাবিরোধী অপরাধ, আয়নাঘর সংক্রান্ত অভিযোগ ইত্যাদি। এদিন বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদার, বিচারপতি মহম্মদ শফিউল আলম মাহমুদ এবং বিচারক মহম্মদ মোহিতুল হক এনাম চৌধুরীর ট্রাইব্যুনাল বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে দোষী সাব্যস্ত করে। এরপরই সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় হাসিনাকে। যদিও আওয়ামি লিগ আগেই জানিয়েছে, জামাত প্রভাবিত ‘ক্যাঙারু আদলতে’ বিচারের নামে প্রহসন চলছে। যেখানে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ নেই, তা কখনই ন্যায় বিচার হতে পারে না।
