shono
Advertisement
Bangladesh

বৈষম্যের অবসানের কথা বলেও বাংলাদেশের নয়া দলের শীর্ষপদে নেই কোনও হিন্দু

দলের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগে গীতা, বাইবেল, কোরান, ত্রিপিটক পাঠ করেন ছাত্ররা।
Published By: Biswadip DeyPosted: 10:21 AM Mar 01, 2025Updated: 10:21 AM Mar 01, 2025

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলাদেশের রাজনীতিতে পথ চলা শুরু করল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’ (এনসিপি)। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির যৌথ উদ্যোগে আত্মপ্রকাশ ঘটেছে এই নতুন রাজনৈতিক দলের। শুক্রবার দলের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগে গীতা, বাইবেল, কোরান, ত্রিপিটক পাঠ করেন ছাত্ররা।

Advertisement

এ দিন ঢাকার মানিক মিয়ঁা অ্যাভিনিউয়ের সমাবেশে নতুন দলের যাত্রার সূচনা হয়। নতুন দলে মোট শীর্ষপদের সংখ্যা থাকছে ১০টি। পূর্ব ঘোষণামতো, নতুন দলের মুখ বা প্রধান নাহিদ ইসলাম। নতুন দলে নাহিদের পরেই আছেন দুজন সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন ও আরিফুল ইসলাম আদিব। দলের মুখ্য সদস্য সচিব করা হয়েছে আখতার হোসেনকে। তাঁর সঙ্গে কাজ করবেন দুজন সিনিয়র সদস্য সচিব। তাঁরা হলেন তাসনিম জারা এবং নাহিদা সরওয়ার নিবা। নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারিকে দলের মুখ্য সমন্বয়কারী করা হয়েছে। মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল)-এর দায়িত্ব পেয়েছেন হাসনাত আবদুল্লা। মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম। যুগ্ম সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ।

বিকাল ৪টে ২০ নাগাদ কোরান পাঠ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা তারেকুল ইসলাম (তারেক রেজা)। এরপর পবিত্র গীতা পাঠ করেন জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতা অর্পিতা শ্যামা দেব। পরে ত্রিপিটক আবির বড়ুয়া এবং বাইবেল পড়েন অলীক মৃ। তাঁরাও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতা। এর পরই সকলে দাঁড়িয়ে জাতীয় সংগীত গান। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহিদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন। সবাইকে নিজ নিজ ধর্ম অনুযায়ী শহিদদের জন্য প্রার্থনা করতেও বলেন তাঁরা। 

তবে, বৈষম্যের অবসানের কথা বলে গলাবাজি করলেও নতুন দলে শীর্ষপদে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কারও জায়গা হয়নি। বাংলাদেশে সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী দেশের দশ শতাংশ সংখ্যালঘু। তাদের সাড়ে সাত শতাংশ হিন্দু। অনেকেই আশা করেছিলেন ছাত্রদের নতুন দল সংখ্যালঘুদের উপর বৈষম্যের অবসান ঘটাবে। কিন্তু সাংগঠনিক পদ বণ্টনে সংখ্যালঘুদের কথা বিবেচনা করা হয়নি।

এ দিকে, কয়েকদিন আগে মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের অ্যাটর্নি জেনারেল মহম্মদ আসাদুজ্জামান বলেছিলেন, দেশের ৯০ শতাংশ নাগরিক মুসলিম। তাই বাংলাদেশের সংবিধানে ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ শব্দটির কোনও প্রয়োজন নেই। সেই বিষয়কে মান্যতা দিয়েই নতুন খসড়া তৈরি করেছে সংবিধান সংস্কার কমিশন। রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ শব্দটিকে বাদ দেওয়া হয়েছে নয়া সুপারিশে। সেই নতুন খসড়াই তুলে দেওয়া হয় প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে।

শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের স্কুলের পাঠ্যপুস্তকে ফের বড় বদল আনল মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন। দেশের জাতীয় পাঠ্যক্রম এবং পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিবিটি) ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের জন্য স্কুলের পাঠ্যপুস্তকে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের বিষয়টি জানিয়েছে। তাদের দাবি, এর মধ্যে দিয়ে দেশের ইতিহাসকে নতুনভাবে তুলে ধরা হয়েছে পড়ুয়াদের কাছে। মুছে ফেলা হয়েছে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রসঙ্গ। শুধু তা-ই নয়, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকাও হ্রাস করা হয়েছে নতুন পাঠ্যক্রমে।

মুজিবুরের সঙ্গে তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর দু’টি ঐতিহাসিক ছবি মুছে ফেলা হয়েছে পাঠ্যপুস্তক থেকে। দুটি ছবিই ১৯৭২ সালের। সেই বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি কলকাতার এক সমাবেশে যৌথ ভাষণ দিয়েছিলেন ইন্দিরা এবং মুজিবুর। সেই ছবি থাকছে না নতুন পাঠ্যপুস্তকে। এ ছাড়াও, ১৯৭২ সালের ১৭ মার্চ ঢাকায় ইন্দিরাকে মুজিবুরের স্বাগত জানানোর ছবিও বাদ পড়েছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • বাংলাদেশের রাজনীতিতে পথ চলা শুরু করল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’ (এনসিপি)।
  • বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির যৌথ উদ্যোগে আত্মপ্রকাশ ঘটেছে এই নতুন রাজনৈতিক দলের।
  • দলের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগে গীতা, বাইবেল, কোরান, ত্রিপিটক পাঠ করেন ছাত্ররা।
Advertisement