সুকুমার সরকার, ঢাকা: ভোটমুখী বাংলাদেশে নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার পরই রাজনৈতিক অশান্তি শুরু হয়ে গিয়েছে। ঢাকার জনবহুল বাজার এলাকায় অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীদের হাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন স্বতন্ত্র্য প্রার্থী ওসমান হাদি। তাঁর মস্তিষ্ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আপাতত সংকটজনক অবস্থায় ঢাকার নামী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি। তবে হাদি একাই নন, তাঁর মতো পরিণতি আরও অনেকের হতে পারে বলে আশঙ্কাপ্রকাশ করছে বিএনপি। মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগির বলেছেন, ''দেশের মানুষ যখন স্বপ্ন দেখছে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে একটা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নির্মাণ করতে চাইছে, ঠিক তখনই বাংলাদেশের শত্রুরা হত্যাকাণ্ডে মেতে উঠেছে। গত পরশু ওসমান হাদির উপর হামলার আমরা তার তীব্র নিন্দা জানিয়েছি। আমরা আশঙ্কা করছি যে, এ রকম কাণ্ড আরও ঘটতে পারে।’’
রবিবার রাজধানীর মিরপুর শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে বিশিষ্টদের শ্রদ্ধা নিবেদন করতে গিয়েছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগির। তিনি বলেন, ''১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে যখন পাক হানাদার বাহিনীর জয় অসাধ্য হয়ে উঠেছিল, চতুর্দিক থেকে যখন মুক্তিবাহিনী ঢাকা ঘিরে ফেলেছে; সেই সময় পাক হানাদার বাহিনী বাংলাদেশের সমস্ত মেধাকে বিনষ্ট করে দেওয়ার জন্য দোসরদের সঙ্গে যোগসাজশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, চিকিৎসক, গবেষক, কবি-সাহিত্যিক, সাংবাদিক-সহ অনেককে তারা তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যা করেছিল। এভাবেই আমরা আমাদের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তানদের হারাই। এটা একটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।’’
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের বক্তব্য, ''নির্বাচনকে বানচাল এবং গণ-অভ্যুত্থানকে নস্যাৎ করার উদ্দেশ্যে গণ-অভ্যুত্থানের নায়ক, নেতা ও অংশগ্রহণকারীদের টার্গেট করে হত্যা করা হচ্ছে।'' রবিবার ঢাকার মিরপুর শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শহিদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এসব কথা বলেন। নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ''১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের ঠিক প্রাক্কালে পরিকল্পিতভাবে লেখক, শিল্পী, সাংবাদিক-সহ স্বাধীনতাকামী বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়েছিল, যাতে বাংলাদেশ একটি মর্যাদাশীল রাষ্ট্র হিসেবে দাঁড়াতে না পারে।''
ওসমান হাদিকে এই মুহূর্তে ঢাকার নামী হাসপাতালের কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে রাখা হয়েছে। মেডিক্যাল বোর্ডের বিবৃতিতে জানানো হয়, রোগীর মস্তিষ্ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ব্রেন প্রোটেকশন প্রোটোকল অনুসরণ করে প্রয়োজনীয় সব সাপোর্ট চালু থাকবে। শারীরিক অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল হলে ফের ব্রেনের সিটি স্ক্যান করা হতে পারে। ফুসফুসে আঘাত রয়েছে এখনও। সংক্রমণ ও এআরডিএস প্রতিরোধের বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে ভেন্টিলেটর সাপোর্ট অব্যাহত রাখা হবে। বর্তমানে তাঁর সার্বিক অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক।
