সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পরিবর্তনের বাংলাদেশে (Bangladesh) বাউলদের উপরে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। আবুল সরকার নামে এক বিখ্যাত বাউল শিল্পীকে গ্রেপ্তার করাকে কেন্দ্র করে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। অভিযোগ, ওই শিল্পী নাকি দাঙ্গা উসকে দিয়েছেন। এদিকে এই ঘটনার নিন্দা করেছে বাংলাদেশের নাগরিক সমাজ। পড়ুয়া থেকে শিল্পী- সকলের দাবি, শেখ হাসিনার সরকারের উৎখাতের পর থেকে বাংলাদেশে 'ধর্মীয় ফ্যাসিবাদের' এক নতুন রূপের উদ্ভব হচ্ছে।
জানা গিয়েছে, পশ্চিম মাদারিপুরের এক গানের অনুষ্ঠানে আবুল সরকারের বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করেন। এরপরই মানিকগঞ্জের এক আদালতের নির্দেশে তাঁকে জেলবন্দি করা হয়েছে। এখানেই শেষ নয়। সম্প্রতি তাঁর দাবিতে যে মিছিল বেরয় সেখানে তাওহিদি জনতা নামে এক কট্টরপন্থী সংগঠনের সদস্যরা হামলা চালালে চারজন আহত হন।
বিশিষ্ট সাহিত্যিক তসলিমা নাসরিন সোশাল মিডিয়ায় ভিডিও শেয়ার করেছেন। সেখানে দেখা গিয়েছে কট্টরপন্থীদের মিছিলের প্ল্যাকার্ডে লেখা- 'একটা একটা বাউল ধর/ ধরে ধরে জেলে ভর'। তসলিমা লিখেছেন, 'এই স্লোগান নিয়ে যে জেহাদিরা মিছিল করছে, তারা সুফিবাদকে হটিয়ে জঙ্গিবাদ প্রতিষ্ঠিত করতে বদ্ধ পরিকর। জঙ্গিদের দেশে সুস্থ মানুষের বসবাস সম্ভব নয়।'
এদিকে সোমবার বাংলাদেশের (Bangladesh) বেশ কয়েকটি বিশিষ্ট নাগরিক সমাজের তরফে আবুলের গ্রেপ্তারি এবং গত কয়েকদিনে অন্য ধর্মগুরুদের উপর ইসলামপন্থী হামলার নিন্দা জানাতে একত্রিত হন। তাঁরা দাবি করেন যে, বর্তমান মহম্মদ ইউনুসের শাসন আমলে ধর্মীয় সংঘাত বেড়েছে।
উল্লেখ্য, জমানা বদলের পর নিকটতম প্রতিবেশী দেশে যেভাবে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ধারাবাহিক ঘটনা প্রকাশ্যে আসছে, তাতে আঙুল উঠছে সেখানকার অন্তর্বর্তী সরকারের দিকেই। ইউনুসের শাসনে মোটেই সুরক্ষিত নয় হিন্দু-খ্রিস্টানদের মতো সংখ্যালঘুরা। লাগাতার তাঁদের উপর হামলা চলছে। যদিও ইউনুসের দাবি, এসব বিচ্ছিন্ন ঘটনা। কোনও সাম্প্রদায়িক অশান্তি নয়, বরং রাজনৈতিক কারণ কিংবা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশের শিকার হতে হচ্ছে হিন্দুদের। কিন্তু সাম্প্রতিক ছবি অন্য কথাই বলছে। আবুল সরকারের গ্রেপ্তারির পর থেকে বিতর্কের পারদ আরও চড়ল।
