shono
Advertisement
Dhaka

দাবি না মানলে দেশজুড়ে আন্দোলন, সচিবালয় থেকেই ইউনুস সরকারকে হুঁশিয়ারি সরকারি কর্মীদের

বিক্ষোভের জেরে কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে ঢাকার সচিবালয়।
Published By: Suchinta Pal ChowdhuryPosted: 03:36 PM May 27, 2025Updated: 03:36 PM May 27, 2025

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একেই নির্বাচন নিয়ে ঘরে-বাইরে চাপ। তার উপর সরকারি কর্মচারী ও প্রাথমিক শিক্ষকদের জোড়া আন্দোলন। ঠিক যেন গোদের উপর বিষফোঁড়া মহম্মদ ইউনুসের। তাঁর সরকারের জারি করা ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সচিবালয়ে আন্দোলনরত কর্মীরা। শুধু তাই নয়, এই বিক্ষোভ কর্মসূচি এবার গোটা দেশের সরকারি দপ্তরে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন তাঁরা। এই বিক্ষোভের জেরে কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে ঢাকার সচিবালয়। মোতায়েন রয়েছে সোয়াট ও বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ)।

Advertisement

আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ের এই আন্দোলন চতুর্থ দিনে পড়ল। সরকারি কর্মীদের এই বিক্ষোভে ব্যাঘাত ঘটছে প্রশাসনিক কাজে। গতকাল সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, আজ সচিবালয়ে সব ধরনের দর্শনার্থীদের প্রবেশ বন্ধ থাকবে। জানা গিয়েছে, সচিবালয়ের ভিতরে সেখানকার কর্মচারী ছাড়া কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এমনকী দুপুর ১টা পর্যন্ত সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রবেশের অনুমোদন দেওয়া হয়নি। এরপর সচিবালয়ের ভিতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আন্দোলনকারীদের এক নেতা মহম্মদ নুরুল ইসলাম। কর্মসূচি চলাকালীন সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে না দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। তাঁর কথায়, এটা মত প্রকাশের অধিকারের লঙ্ঘন। আজকে তাঁদের পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী কর্মসূচি পালিত হয়েছে। যতক্ষণ না পর্যন্ত এই অধ্যাদেশ বাতিল না করা হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আন্দোলন প্রত্যাহার করা হবে না। ভবিষ্যতে এই আন্দোলন আরও তীব্র করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন নুরুল। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, আজকে যদি কোনও ভালো খবর না পাওয়া যায়, তাহলে এই আন্দোলন চলবে, তা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়বে।

উল্লেখ্য, শেখ হাসিনার আমলের ‘সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮’ সংশোধন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। গত ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর রবিবার (২৫ মে) রাতে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করে সরকার। উপদেষ্টা পরিষদে অধ্যাদেশটি অনুমোদনের পর থেকেই গত কয়েকদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন আধিকারিক ও কর্মচারীরা। অধ্যাদেশ জারির খবর প্রকাশ্যে আসতেই তা বাতিল করার দাবিতে ক্ষোভে ফেটে পড়েন সরকারি কর্মীরা। বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়।

নয়া অধ্যাদেশ অনুসারে, বাংলাদেশের সরকারি কর্মচারীরা যদি এমন কোনও কাজ করেন, যা সরকার বা প্রশাসনের প্রতি আনুগত্যের পরিপন্থী, তা হলে তাঁদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হতে পারে। এছাড়া যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া ছুটি নিলে, সহকর্মীকেও ছুটি নিতে প্ররোচিত করলে কিংবা নির্দিষ্ট কাজ করতে ব্যর্থ হলেও সরকারি কর্মচারীদের চাকরি যেতে পারে। কোনও কর্মচারীর বিরুদ্ধে এহেন অভিযোগ উঠলে তাঁকে ৭ দিনের মধ্যে কারণ জানানোর নোটিস দেওয়া হবে। কোনও কর্মচারী দোষী সাব্যস্ত হলে কেন তাঁকে শাস্তি দেওয়া হবে না, তা জানাতে সাত দিন সময় দেওয়া হবে। শাস্তি পেলে সেই কর্মচারী ৩০ দিনের মধ্যে আদালতের দ্বারস্থ হতে পারবেন। তবে রাষ্ট্রপতির আদেশের বিরুদ্ধে আদালতে আপিল করা যাবে না।

অন্যদিকে, বেতনবৃদ্ধির দাবিতে গতকাল সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করেছেনপ্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রকের কনসালটেশন কমিটির সুপারিশ বাতিল করে ১১তম বেতন গ্রেড-সহ তিন দফা দাবি আদায়ে এই আন্দোলন করছেন তাঁরা বলে জানানো হয়। শিক্ষকরা বলছেন, “তাদের দাবি ছিল দশম বেতন গ্রেড, সেই জায়গায় অন্তত ১১তম গ্রেডের প্রস্তাব করলেও মানা যেতো। কিন্তু ১২তম গ্রেড প্রস্তাব করা মানে শিক্ষকদের অসম্মান করা। তাই দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।” ফলে এই জোড়া আন্দোলন কীভাবে ইউনুস সরকার সামলায় সেটাই এখন দেখার।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • একেই নির্বাচন নিয়ে ঘরে-বাইরে চাপ। তার উপর সরকারি কর্মচারী ও প্রাথমিক শিক্ষকদের জোড়া আন্দোলন।
  • ঠিক যেন গোদের উপর বিষফোঁড়া মহম্মদ ইউনুসের।
  • তাঁর সরকারের জারি করা ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সচিবালয়ে আন্দোলনরত কর্মীরা।
Advertisement