সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দু'মাসের যুদ্ধবিরতি শেষে ফের গাজায় ভয়ংকর হামলা চালাচ্ছে ইজরায়েল। পালটা আক্রমণ শানাচ্ছে হামাসও। প্রাণ হারাচ্ছে বহু মানুষ। যুদ্ধের বলি নিষ্পাপ শিশুরাও। গাজায় এই 'গণহত্যা'র প্রতিবাদে আজ সোমবার বাংলাদেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি পথে নেমেছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পড়ুয়ারা। প্রতিবাদ কর্মসূচির কারণে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছে তারা। বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের সঙ্গেও। ইজরায়েলের হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রকও। এই পরিস্থিতিতে ঢাকায় আমেরিকার নাগরিকদের চলাচলে সতর্কতা জারি করেছে মার্কিন দূতাবাস।
গাজায় ইজরায়েলি বাহিনীর হামলার প্রতিবাদে ঢাকা-সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আজ বিক্ষোভ ও সমাবেশ হয়েছে। যার জেরে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস-পরীক্ষা হয়নি। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এই প্রতিবাদ কর্মসূচি হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাশে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা গাজায় হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। এদিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ সমাবেশ করে। সেই সময় তাদের হাতে ‘বয়কট ট্রাম্প, সেভ প্যালেস্টাইন’, ‘বয়কট ইউএসএ’ লেখা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড দেখা যায়। রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ চলাকালে সরকারি বিজ্ঞান কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী রাফিউল আজম সিফাত বলেন, "গাজায় এমন নির্মম গণহত্যার দৃশ্য দেখার পর থেকে আর চুপ থাকতে পারছি না। আজকে বিশ্বব্যাপী কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে আমরা আমাদের ক্লাস বাতিল করেছি। আমরা প্যালেস্টাইনের মানুষের মুক্তি চাই। স্বাধীন প্যালেস্টাইন চাই।"
এদিকে, বিক্ষোভ মিছিল থেকে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার শহরে কয়েকটি দোকান-রেস্তোরাঁয় হামলা-ভাঙচুর চালিয়েছে কিছু লোক বলে অভিযোগ। বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ চট্টগ্রাম নগরের জিইসি এলাকায় পাঁচটি দোকানে ভাঙচুর করে একদল লোক। সেই সময় চারটি রেস্তরাঁ ও একটি জুতোর দোকানেও ভাঙচুর করা হয়। এর মধ্যে দুটি রেস্তরাঁর বাইরের কাচের দেয়াল গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে কে বা কারা এ হামলা চালিয়েছে, সেটা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। অন্যদিকে, এই প্রতিবাদ কর্মসূচির কারণে বেশ কিছুক্ষণ একাধিক রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি হয়। এমনকী পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিও হয় বিক্ষোভকারীদের।
এই পরিস্থিতিতে মার্কিন দূতাবাস বিবৃতি দিয়ে জানায়, 'আমেরিকার নাগরিকদের সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। মনে রাখতে হবে, শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করা হলেও তা সংঘর্ষে পরিণত হতে পারে এবং হিংসার রূপ নিতে পারে। এই অবস্থায় মার্কিন নাগরিকদের জন্য কিছু পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। যে যে জায়গায় বিক্ষোভ হচ্ছে সেখানে সেগুলো এড়িয়ে চলুন। বিভিন্ন আপডেটের জন্য স্থানীয় মিডিয়ায় চোখ রাখুন। মিছিল এড়িয়ে চলুন। জরুরি পরিস্থিতিতে যোগাযোগের জন্য সর্বদা চার্জযুক্ত মোবাইল ফোন সঙ্গে রাখুন।' প্রসঙ্গত, ইজরায়েলের রক্তক্ষয়ী অভিযানে গাজায় মৃতের সংখ্যা ৫০ হাজার পেরিয়ে গিয়েছে।