সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হাসিনা জমানার আইন সংশোধন করে ১৪ বছর পর বাংলাদেশে ফিরেছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। বৃহস্পতিবারই এনিয়ে রায় ঘোষণা করেছে সে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। বিএনপি, জামাতের দাবিমতো আইন সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফেরাতে সায় দিলেও আগামী ফেব্রুয়ারিতে, বাংলাদেশের ত্রয়োদশ সাধারণ নির্বাচন হবে ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনেই। তা সাফ জানিয়ে দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা কার্যকর হবে চতুর্দশ নির্বাচনের সময় থেকে। অর্থাৎ ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচিত সরকারের মেয়াদ শেষের ১৫ দিন পর থেকেই সরকারের দায়িত্ব নিতে পারবে কেয়ারটেকার বা তত্ত্বাবধায়ক সংস্থা।
তবে ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকার তো জনতার দ্বারা নির্বাচিত নয়। তাদের আওতায় কি নির্বাচন হওয়া আইনিভাবে বৈধ? এই প্রশ্ন উঠছে। যা বরাবরই শোনা গিয়েছে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বা তাঁর দল আওয়ামি লিগের সদস্যদের কণ্ঠে। এমনকী আন্তর্জাতিক অপরাধ দমন আদালতে গণহত্যা মামলায় হাসিনা ও তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের মৃত্যুদণ্ডও তাঁরা মানতে নারাজ এই একই যুক্তিতে। প্রশ্ন উঠছে, জনতার দ্বারা নির্বাচিত নয়, এমন সরকারের এই বিচারপ্রক্রিয়া অবৈধ বলে দাবি তুলেছেন আওয়ামি লিগের সদস্যরা। এবার ত্রয়োদশ নির্বাচন করানোর এক্তিয়ারও কতটা রয়েছে ইউনুস সরকারের, সেই প্রশ্নও উঠছে।
বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরানোর নিয়মাবলি নিয়ে আইনজীবী শরিফ ভুঁইঞা জানিয়েছেন, সংবিধান সংশোধনীতে বলা হয়েছে, সংসদ ভেঙে যাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে দায়িত্ব নিতে পারবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। কিন্তু এই মুহূর্তে বাংলাদেশের সরকার ভেঙে গিয়েছে একবছরেরও বেশি সময় আগে। ফলে এখনই তত্ত্ববধায়ক সরকার কোনওরকম দায়িত্ব নেওয়ার মতো অবস্থায় নেই। ফলত ত্রয়োদশ নির্বাচনে সরকার গঠনের পর তা ভেঙে গেলে তবেই কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে কার্যপ্রক্রিয়া চলবে।
ওয়াকিবহাল মহলের মত, তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে সংশোধনীতে উল্লেখ রয়েছে, অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের নিয়েও তৈরি হতে পারে। ঠিক এই সংশোধনীর উপর ভিত্তি করে সম্ভবত ইউনুস সরকার পরবর্তী নির্বাচনের আয়োজন করতে সক্ষম। নির্বাচিত না হওয়া সত্ত্বেও অরাজনৈতিক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সমতুল্য গুরুত্বের নিরিখে আগামী ফেব্রুয়ারিতে ভোট করানোর দায়িত্ব পাচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকার।
