সুকুমার সরকার, ঢাকা: ব্যাপক গণ আন্দোলনের পর বাংলাদেশে গদিচ্যুত হয়েছেন শেখ হাসিনা। দেশত্যাগ করেছেন তিনি। আন্দোলনকারী ছাত্রদের দাবি মেনে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মহম্মদ ইউনুস নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। কিন্তু তবু অশান্তি থামেনি। জেল ভেঙে পালাচ্ছে কয়েদিরা। অবাধে চলছে লুঠপাট। এখনও ঘটছে প্রাণহানি!
বৃহস্পতিবার, বন্দরনগর চট্টগ্রামে ও জামালপুরের জেল ভেঙে বন্দিরা পালানোর চেষ্টা করে। তাদের আটকানোর জন্য গুলিবর্ষণ করে কারারক্ষীরা। বেশ কিছুক্ষণ পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আসে। কিন্তু আজ, শুক্রবার জানা যায়, এই ঘটনায় অন্তত ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত কারারক্ষী-সহ ১৮ জন। জানা গিয়েছে, সেখানে মুক্তির জন্য বিদ্রোহ শুরু করে বন্দিরা। সেনাবাহিনী ও কারারক্ষীদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। ঢাকার অদূরে কাশিমপুর, কুষ্টিয়া, গাজীপুর, সিরাজগঞ্জ, নরসিংদী, যশোর, সাতক্ষীরার জেলায় বিদ্রোহ করে বন্দিরা।
[আরও পড়ুন: বাংলাদেশের শপথ অনুষ্ঠানে শুধু কোরান! ‘বৈষম্য বিরোধী’ সরকারের এ কেমন বৈষম্য, প্রশ্ন নায়িকার]
আজও বিভিন্ন কারাগারে ঝামেলা হয়। চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে এদিনও কয়েদিরা বিদ্রোহ করে। কারারক্ষীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে সকলে। দুপুর ২টো থেকে এই সংঘর্ষ শুরু হয়। এনিয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের ঊর্ধ্বতন এক আধিকারিক গণমাধ্যমে বলেন, বাইরে থেকেও একটি পক্ষ কারাগারের প্রধান গেট ভাঙার চেষ্টা করে। কারারক্ষীরা তাদের প্রতিহত করতে গুলি চালিয়েছে। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কারাগারের অভ্যন্তরে আর বাইরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা পাহাড়ায় রয়েছেন।
এদিকে, দিল্লিকে কড়া বার্তা দিয়ে বিএনপি সাফ জানিয়ে দিয়েছে, ভারত যদি তাদের ‘শত্রু’ হাসিনাকে সাহায্য করে তাহলে নয়াদিল্লি ও ঢাকার মধ্যে সুসম্পর্ক স্থাপন হওয়া কঠিন হবে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, আওয়ামি লিগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ায় কার্যত প্রাণ ফিরে পেয়েছে বিএনপি। এতদিন দলের নেতারা পালিয়ে বিদেশে আশ্রয় নিয়েছিলেন। কিন্তু এখন বিভিন্ন মন্ত্রকের গুরুত্বপূর্ণ পদেও বসেছেন বিএনপি নেতারা। জেলমুক্তি ঘটেছে দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। বাংলাদেশে ফিরতে পারেন তাঁর পুত্র তারেক রহমান। ফলে ভারত বিরোধীতার আবেগকে কাজে লাগিয়ে জনমত গঠন করতে চাইছে বিএনপি।