শীর্ষেন্দু চক্রবর্তী, ঢাকা: বদলের বাংলাদেশে কত না রঙ্গ! হিন্দুত্বের 'গন্ধ' থাকায় আগেই পয়লা বৈশাখে 'মঙ্গল শোভাযাত্রা' নাম বদলে ফেলা হয়েছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের আয়োজনে রাজধানী ঢাকায় বাংলা নববর্ষের যে শোভাযাত্রা বের হয়, তার নতুন নামকরণ হয়েছে 'বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা'। এবার সেই নতুন রীতিতে বৈশাখী অনুষ্ঠানে পুরোপুরি ব্রাত্য রইলেন বাংলাদেশের আমজনতা! সোমবার সকালে ঢাকায় চারুকলা অনুষদের ছাত্রছাত্রীদের আয়োজিত শোভাযাত্রা ঘিরে ফেলা হল পুলিশি ব্যারিকেডে। সাধারণ মানুষজন সাজগোজ করে তাতে অংশ নেওয়ার জন্য এলেও তাঁদের যোগ দিতে দেওয়া হল না শোভাযাত্রায়। শুধু তাইই নয়, বৈশাখী অনুষ্ঠানে দেখা গেল 'ফ্যাসিস্ট' শেখ হাসিনার কাটআউট, উঠল হাসিনা-বিরোধী স্লোগান। বাংলাদেশে এমন চিত্র প্রথম। এনিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে সমালোচনা।

সোমবার সকালে ঢাকায় চারুকলা অনুষদের তরফে বৈশাখী শোভাযাত্রা বেরয় প্রতি বছরের মতোই। কিন্তু এবারের ছবিটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। দেখা গেল, পুলিশি ব্যারিকেডে ঘেরা সেই শোভাযাত্রা। বিশাল একটা কাটআউট, যাতে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখচ্ছবি। কিন্তু তা সাধারণ নয়, মুখোশে হাসিনাকে 'স্বৈরাচারী' হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। স্লোগান উঠেছে, 'স্বৈরাচারের অবসান, ফ্যাসিবাদের অবসান।' সেই শোভাযাত্রায় সাধারণ নাগরিকের যোগদান একেবারে বারণ হয়ে গেল। পুলিশি ঘেরাটোপে কেবলই চারুকলা পরিষদের ছাত্রছাত্রীরা এবং সেখান থেকে ঘোষণা করা হয়েছে, 'কেউ এদিকে আসবেন না।' একই ঘোষণা করা হয়েছে হকারদের জন্যও, যা বদলের বাংলাদেশে একেবারে নতুন!
এত বছর ধরে পয়লা বৈশাখের 'মঙ্গল শোভাযাত্রা'য় সাধারণ মানুষ অংশ নিতেন। এমনকী পথচলতি মানুষও যোগ দিতেন। কিন্তু এবারের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। 'মঙ্গল শোভাযাত্রা' বদলে 'বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা' হওয়ার পর তাতে ব্রাত্য হলেন আমজনতাই! ইউনুসের বাংলাদেশে মুখে ঐক্যের কথা বলা হলেও আসলে উৎসব পালনে রয়ে গেল বিভাজন। তার চেয়ে নজর কাড়ল যে বিষয়টি, তা হল আনন্দের বদলে এই শোভাযাত্রার মূল বিষয় হয়ে উঠল হাসিনা বিরোধিতা। 'সোনার বাংলা'র এই ছবি দেখে লজ্জায় মুখ ঢাকছেন অনেকেই।