সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত সপ্তাহেই বোমাটি ফাটিয়েছিলেন ডেপুটি গভর্নর বিরল আচার্য্য। প্রকাশ্যেই অভিযোগ করেছিলেন রিজার্ভ ব্যাংকের কাজে হস্তক্ষেপ করছে কেন্দ্র। এবার পালটা এল সরকারের তরফ থেকে। কোনও নেতা বা মন্ত্রী নন, রিজার্ভ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নরকে পালটা দিলেন প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের এক শীর্ষ আধিকারিক। প্রধানমন্ত্রীর অধীনে কর্মরত এক শীর্ষ সরকারি আমলা জানিয়েছেন, রিজার্ভ ব্যাংকের এই ব্যপারটা প্রকাশ্যে আনাটা দুর্ভাগ্যজনক। এটা আরবিআইয়ের কাছে আমরা প্রত্যাশা করিনা।মঙ্গলবার অরুণ জেটলি এবং উর্জিত প্যাটেল বৈঠকেও মিলল সেই উষ্ণতার আঁচ। সূত্রের খবর, বৈঠকে জেটলি-উর্জিত প্যাটেল বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন। আরবিআইয়ের তরফে ব্যাংকের স্বশাসনের দাবি জানানো হয়। জেটলি তাঁর বিরোধিতা করে বলেন, আগে যখন রিজার্ভ ব্যাংক নিজের মতো ঋণ দিত তখন অর্থ ব্যবস্থা অন্যরকম ছিল।
[ভোট এলেই রাম মন্দির নিয়ে নাটক করে বিজেপি! কটাক্ষ কংগ্রেসের]
গত সপ্তাহে একটি বিস্ফোরক বক্তব্যে রিজার্ভ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর সরাসরি শীর্ষ ব্যাংকের কাজে কেন্দ্রে হস্তক্ষেপের অভিযোগ আনেন। তিনি বলেন, কেন্দ্র টি-২০ খেলছে, আমরা টেস্ট খেলি। মূলত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কার্যকলাপে কেন্দ্রের বিধি নিষেধ নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন রিজার্ভ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর। তিনি বলেন, বললেন, “অনেক সময় ব্যাংকের ঋণ দেওয়ার পদ্ধতিতে হস্তক্ষেপ করছে কেন্দ্র। নিয়মে শিথিলতা আনার জন্য বারবার চাপ দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে প্রদেয় ঋণ পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলি কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে চাইছে যাতে ভবিষ্যতে সুবিধা হয়, কিন্তু শর্ট-টার্ম সুরাহার আশায় অনেক সময়ই ব্যাংকের আর্থিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। এই শর্ট-টার্ম মানসিকতা থেকে অর্থনীতিকে বাঁচাতে হলে সরকারর হস্তক্ষেপ থেকে শীর্ষ ব্যাংককে দূরে রাখতে হবে। সরসরি সরকারের হস্তক্ষেপ এবং মধ্যস্থতার চেষ্টা অনেক সময়ই রিজার্ভ ব্যাংকের স্বয়ংক্রিয়তাকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করাচ্ছে।”
[রাহুল গান্ধীর ‘জাত’ নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বিজেপির মুখপাত্র সম্বিত]
বলা বাহুল্য, আরবিআই ডেপুটি গভর্নরের বক্তব্যকে ভালভাবে নেয়নি কেন্দ্র। নেতা মন্ত্রীরা প্রকাশ্যে কিছু না বললেও চাপ বাড়ানো হচ্ছে শীর্ষ ব্যাংকের উপর। সোমবার এক সরকারি আমলা বলেন, “রিজার্ভ ব্যাংক বিষয়টা জনসমক্ষে আনবে তা আমরা ভাবতে পারিনি। সরকার এতে উদ্বিগ্ন।” গভর্নর উর্জিত প্যাটেলের উপর চাপ বাড়াচ্ছে অন্য ব্যাংকের কর্মীরাও। ঋণ খেলাপি তথা নন -পারফর্মিং অ্যাসেট বেড়ে যাওয়ার জন্য গভর্নরকেই দায়ী করছেন তারা। এদিকে, আরবিআইয়ের কর্মীরা নিজেদের গভর্নরের পাশেই আছেন। সোমবারই একটি বিবৃতি জারি করা হয়েছে আরবিআই এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের তরফে। যাতে বলা হয়েছে, রিজার্ভ ব্যাংককে উপেক্ষা করা মানে বিপর্যয় ডেকে আনা, সরকারকেই এই প্রবণতা রোধ করতে হবে। দুই শিবিরের উচিত একে অপরের সঙ্গে কথা বলে সমস্যার সমাধান করা, সরকার যেভাবে রিজার্ভ ব্যাংকের উপর গাঁজোয়ারি করার চেষ্টা করছে, তা গোটা দেশের পক্ষে ক্ষতিকর।” স্বাভাবিকভাবেই এই দ্বন্দ্বে অস্বস্তি বাড়ছে কেন্দ্রের।
The post আরও স্পষ্ট আরবিআই-সরকার দ্বন্দ্ব, ডেপুটি গভর্নরের বক্তব্যে অখুশি কেন্দ্র appeared first on Sangbad Pratidin.