অর্ণব দাস, বারাসত: একমাত্র মেয়ে আত্মহত্যা করেছে বছর খানেক হয়ে গেল। এই এক বছরেও মেয়ের শোক ভুলতে পারেননি মা-বাবা। শেষপর্যন্ত সেই শোক সামলাতে না পেরে এবার নিজেদের জীবনে ইতি টানার সিদ্ধান্ত নিল দম্পতি। এমনই মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী বারাসতের সপ্তর্ষিনগর। শুক্রবার সকালে বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ এবং মাছি ওড়াউড়ি দেখে প্রতিবেশীদের সন্দেহ হয়। তাঁরা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দম্পতির দেহ উদ্ধার করে। দেহ দুটি পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য।
বারসতের (Barasat) সপ্তর্ষিনগরের বাসিন্দা ভূতনাথ মণ্ডল ও মৌসুমী মণ্ডল। একমাত্র মেয়েকে নিয়েই তাঁদের সুখের সংসার ছিল। কিন্তু বছর খানেক আগেই সব ওলটপালট হয়ে যায়। তাঁদের একমাত্র মেয়ে আত্মঘাতী (Suicide) হন গত জুলাইয়ে। তার পর থেকেই মণ্ডল দম্পতি অবসাদে (Mental stress) ভুগছিলেন। বার বার আত্মীয়দের কাছে নিজেদের মনের কথা জানাতেন। বলতেন, তাঁদের আর বেঁচে থাকার সাধ নেই। কাকে নিয়েই বা বাঁচবেন? কিন্তু তা যে এভাবে সত্যি হয়ে যাবে বাস্তবে, কেউ ভাবতেও পারেননি।
[আরও পডুন: কবে গড়াবে দিঘার রথের চাকা? কী জানালেন মমতা?]
শুক্রবার সকালে প্রতিবেশীদের মাধ্যমে খবর পান আত্মীয়, বন্ধুরা। শোনামাত্রই তাঁরা ছুটে যান ভূতনাথ মণ্ডলের বাড়ি। সেখান থেকে দুটি মৃতদেহ (Deadbody)উদ্ধার করা হয়। ভূতনাথবাবুর আত্মীয় কৃষ্ণপদ অধিকারী জানিয়েছেন, সপ্তাহের শুরুর দিকে তাঁরা তারাপীঠ গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরেন মঙ্গলবার। তার পর থেকে আর ফোনে যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না। স্বামী, স্ত্রী দুজনেরই ফোন বন্ধ ছিল। শুক্রবারই জানতে পারেন এই ঘটনা। বন্ধু সমীর মণ্ডলেরও একই বক্তব্য। মেয়ে ছিল একেবারে ভূতনাথবাবুর প্রাণ। মেয়েটিও খুব ভালো ছিল। তাই সে চলে যাওয়ার পর থেকে মানসিকভাবে এতটাই ভেঙে পড়েছিলেন মা, বাবা যে বাঁচার ইচ্ছেটাই চলে গিয়েছিল। আর সেই হতাশা থেকেই নিজেদের শেষ করে দিলেন ভূতনাথ ও মৌসুমী। এমনই মনে করছেন আত্মীয়, বন্ধু, প্রতিবেশীরা। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘর থেকে একটি সুইসাইড নোট (Suicide Note) উদ্ধার হয়েছে। তবে কীভাবে তাঁরা আত্মহত্যা করেছেন, তা এখনও অস্পষ্ট।