নব্যেন্দু হাজরা: কুঁচকে গিয়েছে শরীরের চামড়া। চোখেও আবছা দেখেন। হাঁটতে পারেন না সোজাভাবে। মাথার চুলও উঠে গিয়েছে। এই অবস্থাতেও যদি আপনি বিউটি কনটেস্টে (Beauty Contest) চাম্পিয়ন হন!
ভাবছেন মজা করছি! একদম না। ভরা বসন্তে শহরে হতে চলেছে প্রবীণ নাগরিকদের বিউটি কনটেস্ট। যেখানে শারীরিক সৌন্দর্য্যের বদলে দেখা হবে মনের সৌন্দর্য্য। আগামী ২১ শে মার্চ এই প্রতিযগিতায় র্যাম্পে হাঁটা বা মুখমন্ডলের সৌন্দর্য বিচারের মাপকাঠি নয়। দেখা হবে ষাট পেরনোর পরও তাঁর বুদ্ধিমত্তা। ৬৬ জন প্রতিযোগী এতে রয়েছেন। ৩৭ জন পুরুষ এবং ২৯ জন মহিলা এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবেন। বিচারকরা দেখবেন, প্রতিযোগীরা প্রবীণ হয়েও তিনি বয়সের তুলনায় মানসিকভাবে কতটা নবীন, কতটা আধুনিক, কতটা সক্রিয় বা আশাবাদী। তবে তাঁর সঙ্গে সেই মানুষের শারিরীক গঠন কীরকম, সেটাও দেখা হবে।
ঠিকানা শিমলা নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে প্রবীণ নাগরিকদের মানসিকভাবে আরও তরুণ করে তুলতে করা হচ্ছে এই প্রতিযোগীতা। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, এই অনুষ্ঠানে যাঁরা প্রতিযোগী হিসাবে অংশগ্রহণ করবেন, তাঁদের একটি প্রশ্নমালা ভরতি করতে হবে, যার থেকে তাঁরা বুঝে নেবেন তাঁর মানসিক গঠন। এর সঙ্গে যুক্ত হবে প্রতিযোগিনীর মঞ্চের উপস্থাপনা। সব কিছু মিলিয়ে একজন প্রতিযোগী বা প্রতিযোগিনী বিজয়ী হয়ে উঠবেন। ওই সংস্থার কর্ণধাররা জানাচ্ছেন, এটা একটা অভিনব প্রতিযোগিতা। বিউটি কনটেস্ট বলতে প্রধাগত যে ধারণা মানুষের মনে এটা তার থেকে আলাদা। বিউটি কনটেস্টের উদ্ভব ১৮৩৯ সালে। শুরু করেছিলেন আর্চিবোল্ড উইলিয়াম মন্টেগোমারি।
[আরও পড়ুন: ফ্যাশনেও নির্বাচনের প্রভাব, ভোটের প্রচারে নতুন চমক ‘ঘাসফুল-শাড়ি’]
বিউটি কনটেস্ট বলতে আমরা বুঝি নারীর শারিরীক সৌন্দর্য বিচার। এখন প্রচলিত বিউটি কনটেস্টে নারীর শারিরীক সৌন্দর্য ছাড়া তার বুদ্ধিমত্তা, বিচার বোধ এই সবও মাপা হয়। এক্ষেত্রেও প্রবীণদের তাই হবে। তবে শারীরিক সৌন্দ্যর্যের থেকে তাঁর মনের তারুণ্যকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই প্রায় শ’খানেক প্রতিযোগীর থেকে বাছাই করে ৬৬ জনকে চূড়ান্ত করা হয়েছে। প্রতিযোগিতা হবে ক্যালকাটা স্পোর্টস জার্নালিস্ট ক্লাবে।
এই প্রতিযোগিতার বিচারক হিসাবে থাকবেন বাচিক শিল্পী শ্রী সুকুমার ঘোষ আপনার মনোবিদ শ্রী মোহিত রনদীপ এই প্রতিযোগিতার প্রধান বিচারপতির ভূমিকা পালন করবেন এবং তার সঙ্গে ‘প্রবীণ মানুষের সৌন্দর্য বলতে কি বোঝায়’ তার উপর একটি বক্তব্যও রাখবেন। পুরুষ-মহিলা নির্বিশেষে ষাটোর্ধ্ব যে কেউ এই প্রতিযোগী হয়েছেন। পুরুষ ও মহিলা মিলিয়ে দুটি করে মোট চারটি বিভাগ হবে। ৬০-৭০ ‘ক’ বিভাগ এবং ৭১ থেকে ‘খ’ বিভাগ। মোট চারটি পুরস্কার থাকবে। পুরস্কারের নাম ‘প্রবুদ্ধ প্রবীণ/ প্রবীণা’।
[আরও পড়ুন: চুলে আনতে চাইছেন নতুন স্টাইল? অন্যভাবে বাঁধার সহজ কয়েকটি উপায় জেনে নিন]
এই প্রতিযোগিতার অংশগ্রহণ বিনামূল্যে। কিন্তু যাঁরা দর্শক হিসাবে আসতে চান তাঁদের মাথাপিছু ধার্য ২০০ টাকা। দর্শক যে কোনও বয়েসের মানুষ হতে পারেন। যারা এই প্রতিযোগিতা করছেন সেই সংস্থার সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ দে সরকার জানান, “এটা প্রবীণ মানুষদের একটু ভাল রাখার প্রয়াস। তাঁদের মনকে যেন বার্ধক্য যাতে কুঁড়ে কুঁড়ে না খায়, সে কারণেই এই প্রতিযোগিতা। নতুন ধরনের প্রতিযোগীতায় তাঁদের বাঁচার ইচ্ছেকে আরও বাড়িয়ে তুলবে।”