রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: হেলায় সমস্ত বিরোধী দলগুলিকে হারিয়ে উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) মসনদ ফের পদ্মে সাজিয়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে বিজেপি। একইসঙ্গে বাকি চার রাজ্যেও ফলাফলেও পদ্মঝড়। কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দলের এই ফলাফলে উজ্জীবীত বঙ্গের গেরুয়া শিবিরও। ৫ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের ফলাফল স্পষ্ট হতেই ৬, মুরলিধর সেন লেনে দলীয় কর্মী, সমর্থকরা আবির মেখে আনন্দে মেতে ওঠেন। বেলা বাড়তে আরও বিজেপি অফিস থেকে সন্দেশ, লাড্ডু বিলি করা হয়। দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের (Sukanta Majumder) প্রতিক্রিয়া, উত্তরপ্রদেশের জয় বাংলার বিজেপি (BJP)কর্মীরা উদ্বুদ্ধ হয়ে উঠবেন।
এদিন উত্তরপ্রদেশ-সহ ৪ রাজ্যে গেরুয়া ঝড় উঠতেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে ফোন করে অভিনন্দন জানান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। তাঁর মন্তব্য, ”এবার রাজ্যে গণতন্ত্রের বোমা পড়বে।” তাঁর মতো এতটা আত্মবিশ্বাসী না হলেও সুকান্ত মজুমদারের অবশ্য বক্তব্য, ”উত্তরপ্রদেশের জয়ে উদ্বুদ্ধ হবে দলের কর্মীরা। কর্মীদের উপর এর প্রভাব পড়বে। উত্তরপ্রদেশ জয় বাংলার মাটিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। ২০১৪ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত বিজেপি দ্রুতভাবে বাংলায় বেড়েছিল। কিন্তু সংগঠনকে ততটা শক্তিশালী করা যায়নি। একুশের ভোটের ফলের পর সন্ত্রাসের জন্য সেই সংগঠন আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।” বাংলায় দলের সাংগঠনিক অবস্থা যে দুর্বল, তা স্বীকার করেও রাজ্য সভাপতির আশা, উত্তরপ্রদেশ জয়ের প্রভাব এ রাজ্যের দলীয় কর্মীদের বাড়তি অক্সিজেন জোগাবে।
[আরও পড়ুন: পাঁচ রাজ্যে কার্যত নিশ্চিহ্ন কংগ্রেস, উত্তরপ্রদেশে মুখ পোড়ালেন প্রিয়াঙ্কাও]
বৃহস্পতিবার বিজেপির রাজ্য সদর দপ্তর থেকে নরেন্দ্র মোদি ও যোগী আদিত্যনাথের নাম লেখা সন্দেশ বিলি করা হয়। বিলি হয় লাড্ডুও। গোটা কার্যালয় কমলা আবিরে উড়িয়ে, মিষ্টি খেয়ে আনন্দে নাচানাচি করতে দেখা গেল সমর্থকদের। বিজেপি নেতা নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়ের উদ্যোগে মিষ্টিমুখ করানো হল সুকান্ত মজুমদারকেও (Sukanta Majumder)।
শুধু কলকাতাতেই নয়, উত্তরপ্রদেশ-সহ ৪ রাজ্যে বিজেপির জয়ের প্রভাব পড়েছে জেলায় জেলায়। বালুরঘাটে (Balurghat) বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা এদিন বালুরঘাট কোর্ট মোড় এলাকায় নিজেদের মধ্যে আনন্দ-উৎসবে মাতেন। আবির মেখে, পটকা ফাটিয়ে বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা উৎসবে ভেসে যান। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা বিজেপি যুব মোর্চা নেতৃত্ব তথা রাজ্য বিজেপি যুব মোর্চা সাধারণ সম্পাদক অভিষেক সেনগুপ্তের কথায়, ”উত্তরপ্রদেশ ও গোয়ার ফলাফল নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস কথার ফানুস তৈরি করেছিল। উত্তরপ্রদেশের মানুষ দেখিয়ে দিয়েছে, উত্তরপ্রদেশের যোগী ও মোদি ছাড়া রাজ্য চালাবার জন্য কেউ নেই। এই পাঁচটি রাজ্যের মধ্যে তিনটি জায়গাতেই আমাদের ভোটিং পার্সেন্টেজ ও সিট বাড়ছে।”
[আরও পড়ুন: ইউক্রেনের ভয়ংকর শীতে ট্যাঙ্কের মধ্যেই মৃত্যু হতে পারে রুশ সেনাদের! বাড়ছে আশঙ্কা]
তবে উত্তরপ্রদেশের জয় দিয়ে দুধের স্বাদ ঘোলে মিটিয়ে বাংলায় দলের মুষড়ে পড়া কর্মীদের চাঙ্গা করার যতই চেষ্টা করুক শীর্ষ নেতৃত্ব, কার্যত ভেন্টিলেশন থেকে দল কি ফিরবে লড়াইয়ের পথে? অক্সিজেন কি পাবেন কর্মীরা? এই প্রশ্ন থাকছেই।