রমণী বিশ্বাস, তেহট্ট: ভিন রাজ্যে কাজে যাওয়ার পথে অন্ধ্রপ্রদেশে (Andhra Pradesh) পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলো তিন পরিযায়ী শ্রমিক-সহ চারজনের। হাসপাতালে নিয়ে গেলে দু’জনকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। পরে চিকিৎসা চলাকালীন মৃত্যু হয় আরও দু’জনের। জানা গিয়েছে, চালক-সহ গাড়িতে মোট সাতজন ছিলেন। তাদের মধ্যে চারজনের বাড়ি মুর্শিদাবাদ (Murshidabad) জেলার সর্বাঙ্গপুর এলাকায়। চালক-সহ অন্য তিনজন নদীয়ার (Nadia) তেহট্টের বাসিন্দা।
মৃতের পরিবার সুত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার বাড়ি থেকে বের হয়ে বিকাল তিনটে নাগাদ তেহট্ট থানার পাথরঘাটা থেকে একটি ছোট গাড়িতে বেঙ্গালুরু (Bengaluru) যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয় ছয়জনের একটি দল। তারমধ্যে সর্বাঙ্গপুরের চারজন, নারায়পুরের একজন, চাঁদের ঘাটের একজন ও গাড়ির চালক পাথরঘাটার বাসিন্দা। বেঙ্গালুরুতে পরিচিত এক ঠিকাদার মিঠুন বিশ্বাসের কাছে কাজ করতে যাচ্ছিলেন তাঁরা। যাওয়ার পথে রবিবার সকালে অন্ধ্রপ্রদেশের নেলোর এলাকায় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে তাঁদের গাড়িটি।
[আরও পড়ুন: অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় ডেঙ্গি আক্রান্ত সুনীল ছেত্রীর স্ত্রী, ভরতি হাসপাতালে]
গুরুতর জখম অবস্থায় সকলকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয় বাসিন্দারা। সেখানে চিকিৎসক দুজনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। জানা গিয়েছে, মৃত দুজনের নাম মুর্শিদাবাদের সর্বাঙ্গপুরের আকাশ বিশ্বাস (২৫) ও থানার পাড়ার নারায়নপুরের দীনেশ দাস (২৪)। গুরুতর আহত অবস্থায় অন্ধ্রপ্রদেশের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন গাড়িতে থাকা বাকিরা। পরে মৃত্যু হয় নবকুমার বিশ্বাস নামে আরও এক পরিযায়ী শ্রমিকের। সেই সঙ্গে গাড়ির চালকেরও মৃত্যুর খবর মেলে।
মৃত দীনেশ দাসের বাবা লক্ষণ দাস বলেন, “রবিবার সকালে উল্টো দিক থেকে একটি ট্রাক গাড়িটাকে ধাক্কা মারে। রাস্তার পাশে একটি খাদে পড়ে যায় গাড়িটি। স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাদের হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই আমার ছেলে ও সর্বাঙ্গপুরের ছেলেটি মারা যায়। রাতেই আমরা খবর পেয়েছি। আমরা দিন আনা দিন খাওয়া পরিবার। বাড়তি রোজগারের জন্য দীনেশ কাজে যাচ্ছিল। আর দুর্ঘটনায় সব শেষ হয়ে গেল। এখন ওর মৃতদেহ কি ভাবে বাড়িতে আনবো তাই ভেবে পাচ্ছি না। প্রশাসন যদি মৃতদেহ আনার জন্য সাহায্য করে তবে আমাদের খুব উপকার হয়।” বেঙ্গালুরুর ঠিকাদার মিঠুন বিশ্বাস বলেন, “ওদের মধ্যে তিনজন আমার কাছে আগেও কাজ করেছে। এবার আরও তিনজন আসছিল। অন্ধ্রপ্রদেশের নেলোরে ওদের দুর্ঘটনা ঘটে। আমি বেঙ্গালুরু থেকে যাচ্ছি। তারপর আরও বিস্তারিত ভাবে বলতে পারবো।”
