ব্রতদীপ ভট্টাচার্য: লকডাউনের মাঝেই ধুমধাম করে বিয়ে। বউভাতের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অন্তত ৩০০ জন অতিথি। সেখানে আবার সমাজিক দূরত্বের কোনও পাটবালাই ছিল না বলে অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। শেষপর্যন্ত স্থানীয়সূত্রে খবর পেয়ে অনুষ্ঠান বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ। নতুন বরকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পেশ করা হয়। মঙ্গলবার এহেন ঘটনার সাক্ষী থেকেছে শাসন থানার টোনা গ্রাম এলাকা। জানা গিয়েছে, বর বাবাজি সক্রিয় তৃণমূল কর্মী তথা প্রাক্তন পঞ্চায়েত কর্মী। এরপর নিন্দার ঝড় উঠেছে। প্রশাসনের কড়াকড়ি সত্ত্বেও কীভাবে নিয়ম ভাঙলেন ওই ব্যক্তি? পুলিশ কেন আগেভাগে অনুষ্ঠান বন্ধ করল না? উঠছে একাধিক প্রশ্ন। যদিও অভিযুক্তের দাবি, ৩০০ জন আসেনি। মাত্র আট-ন’জন এসেছিলেন। তাও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেছিলেন তাঁরা।
করোনা মোকাবিলায় দেশজুড়ে লকডাউন চলছে। জরুরি কাজ ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হতে বারণ করা হচ্ছে। জমায়েতের উপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারংবার করজোড়ে মানুষের কাছে জমায়েত রুখতে আবেদন করছেন। মানুষকে ঘরবন্দী থাকতে বলছেন। অথচ তারই দলের পঞ্চায়েত প্রধান, পঞ্চায়েত সভাপতি ও সদস্যদের উপস্থিতিতে জন সমাগম করে এই বিয়ের অনুষ্ঠান হয়েছে বলে অভিযোগ।
[আরও পড়ুন: জোয়ারের জলের ধাক্কা, ফ্লাইঅ্যাশ ভরতি বাংলাদেশি জাহাজ ডুবল হুগলি নদীতে]
জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী তথা প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য এখলাছ উদ্দিনের বউভাতের অনুষ্ঠান ছিল। তার আগের দিন গয়ড়ার বাসিন্দা গোলাম মোস্তাফার মেয়ে নাজমুন নাহারের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। মঙ্গলবার দুপুরে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, আত্মীয়স্বজন থেকে মেয়ের বাড়ির লোকজন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। বেশির ভাগ মানুষের মুখ ঢাকা ছিল মাস্কে। তবে সামাজিক দূরত্বের নিয়মকে থোড়াই কেয়ার। যদিও বর বাবাজি এখলাছের দাবি, “কোনও ভিড় ছিল না। লোকজন এসেছেন, খেয়েছেন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে নববধূকে আশীর্ব্বাদ করে চলে গিয়েছেন।” এই অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ায় নাম জড়ায় ফলতি বেলিয়াঘাটা পঞ্চায়েত প্রধান নজিবুল রহমান ও পঞ্চায়েত সভাপতি মেহেদী হাসানের। পঞ্চায়েত প্রধান নজিবুল রহমানের সাফাই, “তিনশো লোকের নিমন্ত্রণ ছিল। আমি ও পঞ্চায়েত সভাপতি বিষয়টি জেনে বিয়ের অনুষ্ঠান বন্ধ করতে বিয়ে বাড়িতে গিয়েছিলাম।”
[আরও পড়ুন: পরনে আদিবাসীদের শাড়ি-মুখে সাঁওতালি ভাষা, গ্রাম ঘুরে করোনা সচেতনতা প্রচারে মন্ত্রী]
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পাত পেড়ে শতাধিক আত্মীয় স্বজন খেলেন। বাড়ির সামনে গাড়ির লম্বা লাইন পড়ল। ছাদের তৈরি হল মণ্ডপ। অথচ সেসব প্রশাসনের চোখে পড়ল না। অনুষ্ঠানের প্রায় শেষে খবর পেয়ে ছুটে আসে পুলিশ ততক্ষণে চম্পট দিয়ছে আত্মীয়স্বজনের দল। যেখানে মুখ্যমন্ত্রী বারবার জমায়েত না করার আবেদন জানাচ্ছেন, তথন তার দলেরই সদস্যরা কীভাবে এই অনুষ্ঠান করল, তা নিয়ে নিন্দায় সরব হয়েছেন সকলে।
দেখুন ভিডিও:
The post লকডাউনের মধ্যেই ধুমধাম করে বউভাত, শ্রীঘরে তৃণমূল কর্মী appeared first on Sangbad Pratidin.
