shono
Advertisement
Rampurhat

ছেলে আসেনি বছর দেড়েক, রামপুরহাট হাসপাতালে প্রতীক্ষায় ৬৩-র লতিকা

এখন তাঁর পরিবার হয়ে উঠেছেন চিকিৎসক ও নার্সরাই।
Published By: Suhrid DasPosted: 04:33 PM Jan 10, 2025Updated: 04:33 PM Jan 10, 2025

নন্দন দত্ত, রামপুরহাট: রাস্তায় পড়ে কাতরাচ্ছিলেন প্রৌঢ়া। ওই অবস্থায় দমকলবাহিনীর কর্মীরা রামপুরহাট হাসপাতালে ভর্তি করান তাঁকে। সেদিন থেকে আজ প্রায় বছর দেড়েক হয়ে গেল রামপুরহাট হাসপাতালের সার্জারি বিভাগই যেন তাঁর ঘর হয়ে উঠেছে। আর তাঁর পরিবার হয়ে উঠেছেন চিকিৎসক ও নার্সরাই। তবুও একাকিত্বের অনুভূতি তাঁকে যেন কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে বছর ৬৩-র প্রৌঢ়া লতিকা দত্তকে।

Advertisement

কথা বলে জানা গেল তাঁর বাড়ি বীরভূমের লাভপুরে। বাড়িতে তাঁর ছেলে রয়েছে। কিন্তু ছেলে তাঁকে এখনও নিতে আসেনি। তাই সার্জারি বিভাগের বেডে শুয়ে সারাক্ষণ একটাই প্রশ্ন তাঁর ছেলে কি তাঁকে নিতে এলেন? এভাবে দিন গুনতে গুনতে কেটে গেল দেড় দেড়টা বছর। তবু যেন ছেলের অপেক্ষা তাঁর দু’চোখে মুখে। এদিকে প্রৌঢ়ার করুণ পরিণতি উপলব্ধি করছেন হাসপাতালে সার্জারি বিভাগের স্বাস্থ্যকর্মীরা বলেন, মা কি ‘বোঝা’? মাকে নিয়ে বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল ছেলের। কিন্তু ছেলে আসেনি। যোগাযোগ রাখেনি পরিবারের কেউ। যেখানে ছেলেকে শেষবার দেখে দেড় বছর পার হয়ে গিয়েছে। তাই শুধু অপেক্ষার প্রহর গুনছেন লতিকাদেবী।

দীর্ঘদিন ধরে লতিকাদেবী একাই হাসপাতালের বেডে থাকেন, তাঁর কোনও সঙ্গীও নেই। ছেলে তো দূর কথা, পরিবারের কেউ তাঁর খোঁজ নেয় না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই প্রৌঢ়ার যত্ন নিচ্ছেন। নিয়মিত খাওয়ানোও হচ্ছে এবং আরও সুস্থ রাখার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। তবে তিনি যে দীর্ঘদিন থেকে বেড দখল করে আছেন, সেক্ষেত্রে হাসপাতালেরও সমস্যা। তারপরও হাসপাতালের চিকিৎসক নার্স তাঁর চিকিৎসায় কোনও ত্রুটি রাখছেন না। হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা জানান, তাঁকে মায়ের মতোই দেখভাল করা হচ্ছে। এই মুহূর্তে লতিকাদেবী অবস্থা উন্নতির দিকে। যদি ছেলেকে তাঁর পাশে পাওয়া যেত, তবে হয়তো লতিকাদেবীর একাকিত্বের যন্ত্রণার কিছুটা হলেও কমত। এই মুহূর্তে হাসপাতালের খাওয়ার ব্যবস্থাপনা, শুশ্রূষা এবং স্বাস্থ্য সেবাই লতিকাদেবীর জীবনের একমাত্র সহায়।

হাসপাতালে এমএসভিপি পলাশ দাস বলেন, "উনি দীর্ঘদিন থেকেই সুস্থ। মানবিকতার খাতিরে তাঁকে আমরা হাসপাতাল থেকে সরিয়ে দিতে পারিনি। পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে প্রৌঢ়াকে কোনও হোমে বিশেষ জায়গায় পাঠানোর ব্যবস্থা করব।"

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • রাস্তায় পড়ে কাতরাচ্ছিলেন প্রৌঢ়া।
  • দমকলবাহিনীর কর্মীরা রামপুরহাট হাসপাতালে ভর্তি করান তাঁকে।
  • রামপুরহাট হাসপাতালের সার্জারি বিভাগই যেন তাঁর ঘর হয়ে উঠেছে।
Advertisement