জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: টেলিভিশনের খবর দেখে ছোট্ট মেয়েটি বুঝেছিল, করোনা নামের অজানা জীবাণুর কামড় কতখানি বিপজ্জনক। বুঝেছিল, এর সামনে কত অসহায় মানুষ। টিভিতে এও দেখেছিল যে এঁদের চিকিৎসার জন্য মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণ তহবিল খুলেছেন। সেই থেকেই বোধোদয়। বনগাঁর তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী ঐশী মিত্র জন্মদিনে উপহার পাওয়া টাকার পুরোটাই দান করে দিল করোনা চিকিৎসায় তৈরি মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণ তহবিলে। মা-বাবার সঙ্গে বনগাঁ মহকুমা শাসকের কার্যালয়ে গিয়ে সেই টাকা তাঁর হাতে তুলে দিয়েছে ঐশী।
বনগাঁ থানার পেয়াদাপাড়া এলাকার বাসিন্দা ঐশীর পরিবার। জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার ঐশীর জন্মদিন ছিল। এবার সে সাত বছরে পা দিয়েছে। লকডাউনের কারণে ঘরেই অনাড়ম্বর জন্মদিন পালন করেছে তার পরিবার। বাবা-মা, আত্মীয়রা তাকে আশীর্বাদ করে হাতে টাকা তুলে দিয়েছেন। সবাই বলেছেন, লকডাউনের পর দোকান-বাজার খুললে খেলনা কিনে নিতে। সবমিলিয়ে, তার হাতে এসেছিল দেড় হাজার টাকা।
[আরও পড়ুন: ‘মাস্ক বা কাপড়ে মুখ ঢাকেননি কেন?’ রাস্তায় নেমে আমজনতাকে ধমক জেলাশাসকের]
সেই টাকা পেয়ে বাবা পল্লব মিত্রর কাছে ঐশী বায়না ধরে, করোনার চিকিৎসার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর হাতে তা তুলে দেবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই সে টাকা দেবে, এই জেদেই অনড় ছিল ঐশী। তখন ছোট্ট মেয়েকে বোঝানো হয়, মহকুমা শাসকের হাতে টাকাটা দিলেই তা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে যাবে।এরপর বাবা পল্লব মিত্র ও মা সুস্মিতা মিত্র মেয়েকে নিয়ে শুক্রবার সকালে মহকুমা শাসকের অফিসে হাজির হন। এসডিও কাকলি মুখোপাধ্যায়ের হাতে টাকাটি তুলে দেওয়া হয়।
[আরও পড়ুন: করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা, পশ্চিমবঙ্গে ঢুকতে বাধা পরিযায়ী শ্রমিকদের]
সেখান থেকে বেরিয়ে ঐশী বলে, “টিভিতে দেখেছি, মুখ্যমন্ত্রী সাহায্য করার কথা বলছেন। তাই ওনাকে করোনা রোগীদের জন্য টাকা দিলাম।” মেয়ের এহেন কাণ্ডে খুশি পরিবার ও এলাকার বাসিন্দারা। বাবা পল্লব মিত্রের কথায়, “মেয়েকে বুঝিয়ে বলি, মহকুমা শাসকের হাতে টাকা দিলে মুখ্যমন্ত্রী হাতেই দেওয়া হবে। এরপরে মেয়ে মহকুমা অফিসে আমাদের সঙ্গে আসে।” ছোট্ট মেয়ের হাত থেকে টাকা পেয়ে মহকুমা শাসক কাকলি মুখোপাধ্যায় বলছেন, “ছোট্ট শিশুকন্যা করোনা যুদ্ধে আমাদের সঙ্গে সামিল হল তার জন্মদিনে পাওয়া টাকা নিয়ে।”
The post টিভি দেখে সচেতন ছোট্ট মেয়ে, জন্মদিনে পাওয়া টাকা দান করে দিল করোনা তহবিলে appeared first on Sangbad Pratidin.
