অর্ণব দাস, বারাসত: বারাসতে নববধূর অস্বাভাবিক মৃত্যুতে খুনের অভিযোগ দায়ের হতেই গ্রেপ্তার হয়েছে স্বামী। কিন্তু এখনও অধরা অভিযুক্ত শ্বশুর ও শাশুড়ি। তাঁদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবিতে শুক্রবার বিক্ষোভ দেখাল মৃতার পরিবার, পরিচিতরা। এদিন বিকেলে বারাসত অশ্বিনীপল্লিতে মৃতার শ্বশুরবাড়ির সামনে দফায় দফায় চলল বিক্ষোভ। ইট ছুড়ে ভাঙচুরও চালানো হল। পরে বারাসত থানায়ও চলল বিক্ষোভ। এর জেরে দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়াল জেলা সদর বারাসতে। পরে পুলিশের আশ্বাসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
মৃতার দিদি সঞ্চরিতা সরকার ও মা মধুছন্দা সরকার জানান, পুরোটাই পরিকল্পনামাফিক খুন, কারণ টাকা। বিয়েতে জিনিস সহ পণের টাকা দিয়েছিলাম। তারপরেও টাকা দিয়েছিলাম। তাতেও ওরা শান্ত হয়নি। আমরা চাই দোষীদের কঠোর শাস্তি। শ্বশুর পুলিশে চাকরি করায় ওদের রেওয়াত করা হবে, তা আমরা মানব না। আইন সবার জন্য সমান। প্রসঙ্গত, বারাসত শক্তিনগর আমতলার বাসিন্দা বছর তেইশের সুনিতা সরকারের সঙ্গে মাস চারেক আগে দেখাশোনা করে বিয়ে হয়েছিল পুলিশ কর্মীর ছেলে সৌম্য দত্তের।
অভিযোগ, বিয়েতে নগদ ছাড়াও সমস্ত জিনিসপত্র দিয়েছিল সুনিতার পরিবার। তারপরেও বাপের বাড়ি থেকে অতিরিক্ত টাকা নিয়ে আসার জন্য সুনিতার উপর চাপ সৃষ্টি করত স্বামী সহ শ্বশুড়বাড়ির লোকেরা। মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে কিছু টাকাও দিয়েছিলেন সুনিতার বাবা রাজ্য সরকারের কর্মী সর্বেন্দ্রদেব সরকারের। ক্রমেই টাকার দাবি বাড়তে থাকলে দিতে অস্বীকার করলে সুনিতার উপর শারীরিক নির্যাতন চালানো শুরু হয় বলেই অভিযোগ শ্বশুড়বাড়ির বিরুদ্ধে। দিন কয়েক আগে ব্যবসার জন্য ফের সৌম্য ৫ লক্ষ টাকা দাবি করে বলে অভিযোগ।
কিন্তু এত পরিমাণ টাকা একসঙ্গে দিতে না পারার কথা বাপেরবাড়ির তরফে জানানো হলে নববধূর উপর অত্যাচার বাড়তে থাকে। এরই মধ্যে গত বুধবার রাতে মেয়ের মৃত্যুর খবর জানতে পারে পরিবার। মৃতের হাতে, পায়ে, নাকে, মুখে আঘাতের চিহ্ন দেখে খুনের অভিযোগ তোলে তাঁরা। এনিয়ে বারাসত থানায় স্বামী-সহ শ্বশুর ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে খুনে অভিযোগ দায়ের হলে গ্রেপ্তার হয় সৌম্য। কিন্তু শ্বশুর, শাশুড়ি গ্রেপ্তার না হওয়ায় এদিন বিক্ষোভ দেখায় মৃতের পরিবার। এনিয়ে বারাসত জেলা পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খরিয়া বলেন, "অভিযোগ খতিয়ে দেখে তদন্ত শুরু হয়েছে। ধৃতের পরিবারের বাকিদের ভূমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।"
