ধীমান রায়, কাটোয়া: চরম অর্থাভাবকে উপেক্ষা করেও নিজের লক্ষ্যে যে অবিচল থাকা যায় তা দেখিয়ে দিল কাটোয়ার পানুহাট বসন্তপল্লির বাসিন্দা সোমা সেন। টিনের ছাউনি দেওয়া একটি মাত্র ঘরেই ৪ জনের বাস। সেখানেই রান্না-খাওয়া।সেখানে পড়াশোনা করেই মাধ্যমিকের দারুণ রেজাল্ট করে সকলকে চমকে দিল সোমা। তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৪৩। এবছর কাটোয়া রাজমহিশীদেবী স্কুলে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে সে।
[আরও পড়ুন: মাধ্যমিকের মেধাতালিকায় জ্বলজ্বলে একঝাঁক ছাত্রী, জেলাস্তরে নারীশিক্ষায় অগ্রগতি]
কাটোয়া শহরের একটি দোকানে চাকরি করেন। সামান্য রোজগারে সংসার চালাতে কার্যত হিমশিম খেতে হয়। মাধ্যমিকের পরেই বাবা জানিয়ে দিয়েছিলেন, তাঁর পক্ষে আর মেয়ের পড়াশোনার খরচ জোগানো সম্ভব নয়। বাধ্য হয়েই মাধ্যমিক শেষ হতেই টিউশনি পড়ানো শুরু করে দেয় সোমা। সোমারা দুই বোন। মেধাবী ছাত্রীটির মা মণিকাদেবী জানিয়েছেন, “আমার মেয়ে পড়াশোনায় খুব ভাল। কিন্তু টিউশন দিতে পারিনি পয়সার অভাবে। স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের থেকে যেটুকু সাহায্য পেয়েছে, তা দিয়েই পড়াশুনো এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে। ওর বাবা বলে দিয়েছে আর পড়াশোনার খরচ জোটাতে পারবেন না। তবে মেয়ে হাল ছাড়েনি। নিজের পড়াশোনার খরচ চালাতে পরীক্ষার পর থেকেই টিউশন পড়ানো শুরু করে দিয়েছে।”
[আরও পড়ুন: ভোটের পরেও অব্যাহত সংঘর্ষ, বাসন্তীতে আক্রান্ত বিজেপি কর্মী]
সোমা জানিয়েছে, “স্কুলের শিক্ষকরা আমাকে বিজ্ঞান নিয়ে পড়ার পরামর্শ দিয়েছেন।কিন্তু বিজ্ঞান নিয়ে পড়া আমার কাছে বিলাসিতা। কলা বিভাগে ভরতি হব বলে ঠিক করেছি। ভবিষ্যতে শিক্ষকতা করতে চাই। যদি সফল হই, তাহলে বিনা বেতনে ছাত্রছাত্রীদের পড়াব। এটাই এখন জীবনের লক্ষ্য।” পড়াশোনার করার জন্য নিজেকে তো কম লড়াই করতে হচ্ছে না। কিন্তু, ভবিষ্যতে কোনও পরিস্থিতিতে পড়তে না হয়, সেদিকে নজর সোমা সেনের।
ছবি: জয়ন্ত দাস
The post অভাব নিত্যসঙ্গী, মাধ্যমিকে নজরকাড়া সাফল্য পেল কাটোয়ার সোমা appeared first on Sangbad Pratidin.
