সৌরভ মাজি, বর্ধমান: এই দেবীর অদ্ভুত দর্শন। সাধারণত এমন রূপে দেবীমূর্তি সচরসাচর দেখা যায় না। একেবারে কঙ্কালসার চেহারা। সেই থেকে নাম হয়েছে কঙ্কালেশ্বরী। সংস্কার হওয়ার মন্দিরের টেরাকোটার কারুকাজও দেখার মতো। বর্ধমান শহরের কাঞ্চননগরে দেবীর মন্দিরে এখন কালিকার আরাধনার প্রস্তুতি জোর কদমে।
[এককালের ত্রাস, এখনও ভক্তিভরে মা কালীর পুজো করেন এই প্রাক্তন ডাকাত সর্দার]
মানবশরীরে শিরা-উপশিরা, ধমনী, অস্থি, পেশী, যেভাবে থাকে ঠিক সেইভাবে দেবীমূর্তি পাথরে খোদাই করা হয়েছে। কালীমূর্তি এখানে কঙ্কালের রূপে রয়েছেন। তাই কঙ্কালেশ্বরী কালী বলেই পরিচিত। প্রতি বছর মহাধূমধাম সহকারে দেবীর আরাধনা হয়ে থাকে। এবারও তার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। বর্ধমান শহরের কাঞ্চননগরে রয়েছে দেবীর মন্দির। শোনা যায় শ্রীচৈতন্যদেবের দাক্ষিণাত্য ভ্রমণের সঙ্গী ছিলেন গোবিন্দ দাস। তাঁর জন্মভিটে রয়েছে এই কাঞ্চননগরে। গোবিন্দ দাসের জন্মভিটের অদূরেই কঙ্কালেশ্বরী কালীমন্দির। এখানে পঞ্চরত্ন বিষ্ণুমন্দির রয়েছে। সেখানেই অধিষ্ঠিত হয়েছে কঙ্কালেশ্বরী কালী। ১৯২৩ সালে এই এলাকায় বন্যা হয়েছিল। দামোদর একেবারে ভাসিয়ে দিয়েছিল। বন্যার জল নামার পর দামোদরের গর্ভ থেকে উদ্ধার হয় কষ্ঠিপাথরের এই দেবীমূর্তি। তার পর তা প্রতিষ্ঠিত করা হয় কাঞ্চননগরের পঞ্চরত্ন বিষ্ণুমন্দিরে।
[একই মন্দিরে জোড়া কালীর আরাধনা, কারণটা অদ্ভুত]
তখন থেকে দেবীর আরাধনা হয়ে আসছে। প্রচুর ভক্ত আসেন এখানে। মন্দিরকে ঘিরে পর্যটনকেন্দ্রও গড়ে উঠেছে কাঞ্চননগরে। গোবিন্দ দাসের ভিটে, বারদুয়ারি, কঙ্কালেশ্বরী মন্দির, রথতলাকে নিয়ে একদিনের ভ্রমণের অন্যতম কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। বর্ধমান পুরসভা ও বর্ধমান উন্নয়ন সংস্থার তরফে কঙ্কালেশ্বর কালী মন্দির ও সংলগ্ন এলাকাকে সাজিয়ে তোলা হয়ছে। মন্দির সংলগ্ন এলাকায় গড়া হয়েছে অবসরিকা বিনোদন পার্ক। বসানো হয়েছে পথবাতি। রাস্তাঘাটের সংস্কার হয়েছে। দেবীর আরাধনায় বহু দূর থেকে ভক্তরা প্রতি বছর ছুটে আসেন। মনোস্কামনা পূর্ণ হলে তারা ফের পুজো দিয়ে যান।
The post কঙ্কালসার চেহারায় কালিকার আরাধনা বর্ধমানে appeared first on Sangbad Pratidin.
