চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: আজ থেকে উনিশ বছর আগে চুরুলিয়ায় নজরুল মেলার প্রস্তুতি চলছিল৷ সময়টা ১৯৯৯ সালের ২০ মে৷ কবিতীর্থ চুরুলিয়ায় এসেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী। তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বেলা একটা নাগাদ হঠাৎ হাজির হন প্রত্যন্ত চুরুলিয়া গ্রামে। অ্যাকডেমির অফিস ঘরে তিনি আসেন। সংগ্রহশালা ঘুরে দেখেন। নিজের হাতে স্পর্শ করেন কবির বিভিন্ন কবিতার পাণ্ডুলিপি। সেদিন চুরুলিয়া নজরুল অ্যাকাডেমির সম্পাদক ছিলেন কাজী রেজাউল করিম। আজও রয়েছেন একই পদে। স্মৃতি হাতরে তিনি বলেন কবিতীর্থের দুরাবস্থার কথা শুনে দুঃখ পেয়েছিলেন অটল বিহারী বাজপেয়ী।
[‘বিশ্বনেতা’র প্রয়াণে শোকস্তব্ধ রাশিয়া-আমেরিকা]
তিনি নজরুল ইসলামের স্মৃতি বিজড়িত ঘর, সম্পদ, সংগ্রহশালার রক্ষণাবেক্ষণ ও অ্যাকাডেমি চালানোর জন্য আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করেছিলেন। অ্যাকাডেমির জন্য ১ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা তিনি বরাদ্দও করেছিলেন। কিন্তু বাম আমলে সেই টাকা জামুড়িয়া বিডিও অফিস পর্যন্ত এসে অ্যাকাডেমির হাতে এসে আর পৌঁছায়নি। একঘন্টার মতো সেখানেই ছিলেন তিনি। ২৫ মে থেকে নজরুল মেলা শুরু হওয়ার কথা। মেলার প্রস্তুতি চলাকালীন তিনি এসেছিলেন। রেজাউল করিম বলেন নিরাপত্তার বলয়ে সেদিন ঘিরে ছিল গোটা গ্রাম।
[দল নয় দেশই আগে, সংসদে রাজধর্মের পাঠ দিয়েছিলেন বাজপেয়ী]
প্রধানমন্ত্রীর আগমনের খবর শুনে গোটা জামুড়িয়া সেদিন উপচে পড়েছিল। অজয়ের ওপারে বীরভূম থেকেও পিলপিল করে লোক এসেছিলেন। অটলবিহারী বাজপেয়ী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রমোদ মহাজন সেদিন কবি ও কবি পত্নীর সমাধিস্থলে ফুলের মালা দিয়েছিলেন। অ্যাকাডেমির সম্পাদকের মেয়ে সোনালি কাজী বলেন, তখন তিনি ছোট। বন্ধুদের সঙ্গে নজরুলগীতি করেছিলেন। সেই গান শুনেছিলেন। সেই সময়ের প্রবীণ সাংবাদিকরা বলেন অ্যাকাডেমির বাইরে মস্ত ব্যারিকেড তৈরি হয়েছিল।নিরাপত্তার জন্য ভেতরে প্রবেশ কেউ করতে পারেনি। তবু অটলজিকে ডাকতেই তিনি নিজেই এগিয়ে এসে প্রশ্নের জবাব দিয়েছিলেন।
[বাজপেয়ী-মমতা যুগলবন্দিতে বিপ্লব ঘটেছিল রেলে]
আসানসোলের জামুড়িয়া বিধানসভার একফালি গ্রাম চুরুলিয়া। কাজী নজরুলের জন্মস্থান। এখানেই রয়েছে কবির স্মৃতি বিজরিত সব কিছুই। এই ছোট্ট গ্রামে বাংলাদেশের প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনাও এসেছিলেন। তারপরেই পা রাখেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। চুরুলিয়ার দৌলতে সেদিন বর্ধমান জেলা দেখতে পেয়েছিল তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীকে৷ সেটি ছিল অরাজনৈতিক অনুষ্ঠান। অ্যাকাডেমির সদস্যরা বলেন, তাঁরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে কৃতজ্ঞ। তিনি চুরুলিয়ার জন্য সেদিন প্রধামন্ত্রীকে নিয়ে এসেছিলেন প্রত্যন্ত গ্রামে। পরবর্তীকালে নজরুল বিশ্ববিদ্যলয় থেকে অ্যাকাডেমি, বিমানবন্দরের নামকরণ সবই করেছেন নজরুলের জন্য। তাই তাঁরা কৃতজ্ঞ।
The post চুরুলিয়ার দুরাবস্থায় দুঃখ পেয়েছিলেন বাজপেয়ী, স্মৃতিচারণায় নজরুল অ্যাকাডেমির সদস্যরা appeared first on Sangbad Pratidin.
