বাবুল হক,মালদহ: যেখানেই তিনি, সেখানেই জনস্রোত। সামসি থেকে সুজাপুর, পাকুয়াহাট। বৃহস্পতিবার তিনটি জনসভা সেরে বহু বছর পর মালদহ শহরের রাজপথে রোড শো করলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ ভাসলেন জনজোয়ারে৷
[আরও পড়ুন: হাতির ভয়ে সকালেই বুথে, ভোটের পর চা-বিস্কুট-খিচুড়ি পেয়ে খুশি বনবসতিবাসী]
এই প্রথম গোটা ইংরেজবাজার শহরে পদযাত্রা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটা নাগাদ শহরের রাজমহল রোডের রবীন্দ্রমূর্তির সামনে থেকে তৃণমূল সুপ্রিমোর পদযাত্রা শুরু হয়। নেত্রীর সঙ্গে ছিলেন মালদহের দুই কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী মৌসম বেনজির নূর এবং মোয়াজ্জেম হোসেন। ছিলেন কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী, সাবিত্রী মিত্র, নীহার ঘোষ-সহ শহরের তৃণমূল নেতারাও। রাজমহল রোড থেকে কৃষ্ণজীবন স্যান্যাল রোড হয়ে গৌড় রোড মোড়। তারপর মকদমপুর রোড হয়ে শহরের প্রাণকেন্দ্র ফোয়ারা মোড়। সেখানেও পদযাত্রা শেষ করেননি মমতা। ফোয়ারা মোড় থেকে নেতাজি মোড় হয়ে দক্ষিণ বালুচরের রাস্তা। তারপর মহানন্দা নদীর দ্বিতীয় সেতু পেরিয়ে ওল্ড মালদহের সাহাপুর মোড়ে পৌঁছে পদযাত্রা শেষ করেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। এদিন প্রায় চার কিলোমিটার হেঁটেছেন তিনি৷ তাঁকে দেখতে সাধারণ মানুষজনও বাড়ি থেকে শহরের রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন। প্রণাম জানিয়ে হাত নেড়ে মানুষের আশীর্বাদ কুড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
শুধু এখানেই নয়, গনিখানের গড় সুজাপুরেও তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের জনসভায় ভিড় উপচে পড়ে। সেখানেও মাঠে তিল ধারণের জায়গা ছিল না। বৃহস্পতিবার দুপুর বারোটা থেকেই সুজাপুরের হাতিমারি ময়দানমুখী ছিলেন এলাকার মানুষজন। নেত্রীর ভাষণ শুনতে হাজির হয়েছিলেন মহিলারাও। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় এই প্রথম কালিয়াচকের হাতিমারি মাঠে জনসভা করেন। ফলে পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলির মানুষও উৎসাহী হয়ে উঠেছিলেন নেত্রীর কথা শুনতে৷ মাঠ ভরে যাওয়ায় কয়েক হাজার মানুষ ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে দাঁড়িয়েই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ভাষণ শুনেছেন।
[আরও পড়ুন: বুথে গুলি চালিয়ে কাঠগড়ায় তৃণমূল নেতা, অভিযোগ অস্বীকার শাসকদলের]
সেই আটের দশকে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী জনসভা করেছিলেন এই হাতিমারি মাঠে। সেবার বরকত গনি খান চৌধুরী লোকসভায় জিতেছিলেন। তারপর থেকেই এই কালিয়াচক-সুজাপুর এলাকা গনি খানের শক্ত ঘাঁটি হয়ে উঠেছিল। সেই হাতিমারি মাঠেই এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের জনসভা। লোক সমাগমের নিরিখে ইন্দিরা গান্ধীর সেই জনসভাকেও কার্যত ছাপিয়ে গিয়েছে বলে স্থানীয়রা দাবি করেন। সুজাপুরের জনসভায় উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডল, বিধায়ক সাবিনা ইয়াসমিন ও নীহাররঞ্জন ঘোষ, আবু নাসের খান চৌধুরী-সহ একাধিক শীর্ষ নেতানেত্রী৷ সব মিলিয়ে, এদিন মালদহ শহর জুড়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিচরণ ছিল অবাধ৷ ভোটের মুখে তাঁকে এভাবে পেয়ে আপ্লুত মালদহবাসী৷
The post তিনটি জনসভা শেষে ৪ কিলোমিটার হেঁটে রোড শো, মমতায় মুগ্ধ মালদহবাসী appeared first on Sangbad Pratidin.
