সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দীর্ঘ প্রায় ২ মাস পর বাংলাদেশের জেল থেকে মুক্ত হয়ে ঘরে ফিরেছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৯৫ জন মৎস্যজীবী। রবিবার দুদেশের জলসীমায় এই হস্তান্তরের পর সোমবার গঙ্গাসাগরে তাঁদের সঙ্গে পরিবারগুলিকে মিলিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মৎস্যজীবীদের হাতে তুলে দিলেন আর্থিক সাহায্য এবং কিছু উপহার। তবে তাঁদের কয়েকজনের শারীরিক অবস্থা দেখে খোঁজখবর নিয়ে যা জানলেন, তাতে মুখ্যমন্ত্রীর চোখে জল!
মঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি অভিযোগ তুললেন, বাংলাদেশে জেলবন্দি অবস্থায় মৎস্যজীবীদের উপর অত্যাচার হয়েছে, যার জেরে অনেকে পা-কোমরে চোট পেয়েছেন। হাঁটতে অসুবিধা হচ্ছে তাঁদের। বললেন, ''বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক খুবই ভালো। আমরা ওদের ভালোবাসি। কিন্তু একটা পরিস্থিতি এমন হল যে চোখে জল এসে যাওয়ার মতো।'' জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিলেন, আহত মৎস্যজীবীদের ভালোভাবে চিকিৎসা করানোর জন্য।
গত অক্টোবরে কাকদ্বীপ, নামখানার ৬টি মাছ ধরার ট্রলার-সহ মোট ৯৬ জন মৎস্যজীবী বাংলাদেশের জলসীমায় ঢুকে পড়ার অভিযোগে সে দেশের নৌবাহিনীর হাতে আটক হন। একজন জলে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন। বাকি ৯৫ জনকে নিয়ে পটুয়াখালির জেলে রাখা হয়। আর সেই জেলেই তাঁদের উপর অত্যাচার হয়েছে বলে অভিযোগ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার গঙ্গাসাগরে গিয়ে তিনি বললেন, ''আমি তাঁদের সঙ্গে দেখা করব বলে সবাই এখানে এসেছেন। খেয়াল করলাম, কয়েকজন একটু খুঁড়িয়ে হাঁটছেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম, কেন খুঁড়িয়ে হাঁটছেন? তাঁরা কেউ কিছু আমাকে বলেননি। আমি খবর নিয়ে জানতে পারলাম, ওঁদের জেলে মারধর করা হয়েছে। পা-কোমরে চোট লেগেছে। চোখে জল এসে যাওয়ার মতো ঘটনা। কী যে পরিস্থিতি হল!''
মৎস্যজীবীদের পাশে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, “আপনারা কখনওই আমাদের সীমানার বাইরে যাবেন না। তাতে মাছ উঠলে উঠবে, না-উঠলে না-উঠবে। আগে জীবন বাঁচবে। জীবন বেঁচে থাকলে অনেক মাছ পাবেন।” মুখ্যমন্ত্রী দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক এবং কাকদ্বীপের বিধায়ক মন্টুরাম পাখিরাকে তিনি নির্দেশ দেন, আহতদের ভাল করে চিকিৎসা করানোর জন্য। তাঁদের কোনও অর্থোপেডিকের কাছে নিয়ে যাওয়ারও পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী।