রাজকুমার, আলিপুরদুয়ার : রবিবার বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের দর্শন হয়েছিল বলে দাবি করেছিলেন কোচবিহারের এক দম্পতি। যেসময় এবং যে এলাকায় তাঁরা রয়াল বেঙ্গল টাইগার দেখেছিলেন সেই একই এলাকায় একই সময় একটি বিশালাকার চিতাবাঘের ছবি ক্যামেরা বন্দি করেছেন অন্য পর্যটকরা। যা থেকে কার্যত বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলে রয়াল বেঙ্গল টাইগারের উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন ওঠেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চিতাবাঘের ছবি ক্যামেরা বন্দি করা সেই পর্যটকরা অবশ্য বলছেন, বড় আকারের লেপার্ডটিকে দেখে কোচবিহারের ওই দম্পতি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার ভাবতে পারেন। যদিও ক্যামেরা বন্দি লেপার্ডের ছবি দেখে কোচবিহারের পর্যটক সব্যসাচী রায় অবশ্য পরিষ্কার জানিয়েছেন, তিনি যে বাঘকে দেখেছেন সেটা এই বাঘ নয়। এদিনও টেলিফোনে তিনি বলেন, “আমরা রয়াল বেঙ্গল টাইগার দেখেছি বলেই মনে হচ্ছে। আমার দেখা বাঘের ছবি এটা নয়।” এদিকে বিষয়টি নিয়ে কোন মন্তব্য করতে চাইছে না বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প কর্তৃপক্ষ।
বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ক্ষেত্র অধিকর্তা শুভঙ্কর সেনগুপ্ত বলেন, “আমি বিষয়টি নিয়ে কোন মন্তব্য করতে চাইছি না। এটা নিয়ে এখন কিছু বলাও যাবে না। রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার দেখার দাবি যে কেউ করতেই পারেন। আমরা সেই অনুযায়ী যা যা ব্যবস্থা নেওয়ার তার সব ব্যবস্থাই গ্রহণ করেছি। এর বেশি কিছু আমি বলব না।”
[রান্নাঘরে চিতাবাঘ! আতঙ্ক ছড়াল ডুয়ার্সের বনবসতিতে]
উল্লেখ্য ২৪ ফেব্রুয়ারি কোচবিহার মহিশবাথান এলাকার পর্যটক সব্যসাচী রায় দাবি করেন, জয়ন্তী থেকে ফেরার সময় বক্সা মোড় ও ২৩ মাইল এলাকার মাঝে তাঁরা রয়াল বেঙ্গল টাইগার দেখেছেন। এই মর্মে তাঁরা বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প কর্তৃপক্ষের কাছে একটি লিখিতও জমা দিয়েছেন। তাঁদের দাবি, রবিবার সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিট নাগাদ তাঁরা ওই এলাকায় একটি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার দেখতে পেয়েছেন। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সেই খবর প্রকাশিতও হয়েছে। আর তা দেখেই পর্যটকদের আরেকটি দল সেদিনের সেই ছবি প্রকাশ্যে এনেছেন। ওই ছবিতে দেখা যাচ্ছে, একই এলাকায় সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা থেকে সাড়ে সাতটা পর্যন্ত প্রায় এক ঘণ্টা একটি বিশালাকার লেপার্ড ঘোরাঘুরি করেছে। যা বিভিন্ন পর্যটকদের ক্যামেরায় বিভিন্ন সময়ে ধরা পড়েছে। যারা এই লেপার্ডের ছবি ক্যামেরা বন্দি করেছেন তাঁদের দাবি, ওই সময় একটি কোচবিহারের গাড়ি তাঁদের ওভারটেক করে গেছে। ফলে এই বিশালাকার লেপার্ড দেখে কোচবিহারের পর্যটকদের রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার ভাবার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে বলেই মনে করছে বিভিন্ন মহল।
বিষয়টি নিয়ে আলিপুরদুয়ার নেচার ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য অমল দত্ত বলেন, “বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলে এখন রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার নেই এটা সর্বজনবিদিত। এই অবস্থায় রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার দর্শন কোনভাবেই সম্ভব নয়।”
The post রয়্যাল বেঙ্গল না চিতাবাঘ! ক্যামেরাবন্দি ছবি নিয়ে ধোঁয়াশায় ডুয়ার্সের পর্যটকরা appeared first on Sangbad Pratidin.
