বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: বড়দিনের (Christmas) আগে ফের ধর্মাচরণ নিয়ে বিতর্কিত পোস্টার কট্টর হিন্দুত্ববাদীদের। নদিয়ার কৃষ্ণনগরের (Krishnagar) একাধিক জায়গায় পাঁচিলে দেওয়া পোসটার, যাতে লেখা – ‘হিন্দুরা চার্চে গিয়ে স্বধর্মের অবমাননা করবেন না।’ আরও একটি পোস্টারে লেখা – ‘হিন্দুদের ধর্মপালন চার্চে নয়, মন্দিরে। স্বধর্ম পালন করুন।’ এই পোস্টারগুলি নিয়ে সংবাদমাধ্যমে শোরগোল শুরু হতেই পিছু হঠে সেসব সরিয়ে দেওয়া হয়। তবে বৃহস্পতিবার সকালেও কৃষ্ণনগর জেলা প্রশাসনিক ভবনের কাছে দেওয়ালে চোখে পড়ল বিতর্কিত পোস্টার। এ নিয়ে সরব স্থানীয় বাসিন্দারা।
নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগর, তাহেরপুর, রানাঘাটে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষের বাস। এখানে বড়দিনে বিশেষ উৎসব পালিত হয়। ধর্ম নির্বিশেষে খ্রিস্টানদের সঙ্গে উৎসবে মেতে ওঠেন হিন্দুরাও। চার্চে গিয়ে জমিয়ে কেক খাওয়া, শুভেচ্ছা বিনিময়ে এখানকার চেনা ছবি। বছরের পর বছর ধরে এমনটাই চলে আসছে।
[আরও পড়ুন: বিশ্বভারতীর অনুষ্ঠানে কেন গরহাজির মুখ্যমন্ত্রী? বিজেপির প্রশ্নের জবাব দিল তৃণমূল]
কিন্তু খ্রিস্টানদের উৎসবে শামিল না হওয়া ফতোয়া জারি করে আচমকা বজরং দলের এই পোস্টারে হতবাক স্থানীয়রা। স্মরণাতীত কালে ধর্ম নিয়ে এমন ফতোয়া জারি হয়নি বলেই মত তাঁদের। ভ্যালেনটাইন্স ডে পালনে নিষেধাজ্ঞা জারির মতো কিছু কিছু ঘটনা ঘটলেও হিন্দুদের চার্চে যেতে বাদা দিয়ে এমন হুমকির কথা মনে করতে পারছেন না তাঁরা। সেইসঙ্গে অভিযোগ, এর পিছনে অন্য কিছু নয়, পুরোপুরি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যই রয়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘হাত ধরবেন না’, সিবিআই আদালতে মেজাজ হারিয়ে অফিসারদের ধমক এনামুলের]
বজরং দলের পোস্টারগুলিতে আরও লেখা যে বড়দিনে হিন্দুরা যেন ঘরে ঘরে তুলসী পূজন উৎসব পালন করেন। বজরং দলের তরফে সেকথা স্বীকার করে যুক্তি, হিন্দুদের কাছে তুলসী পূজনের আবেদন করাই যায়। এতে বিতর্কের কিছু নেই। তবে বড়দিনের ঠিক আগে কৃষ্ণনগরের খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীতে বাসস্থানগুলিতে এই পোস্টারে রাজনৈতিক রং দেখছেন বেশিরভাগ মানুষ। একুশে ভোটের আগে বিজেপি এই এলাকায় আরও বেশি মেরুকরণের রাজনীতি করতে চাইছে বলে অভিযোগ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের। বিজেপির অবশ্য পালটা দাবি, এসব পোস্টারের সঙ্গে তাদের কোনও যোগ নেই। গোটাটাই তৃণমূলের ষড়যন্ত্র।