সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: দোলের দিন পিকনিকের মহা আয়োজন। বিশেষ মেনু হরিণের মাংস। তার বন্দোবস্ত করে দেওয়ার জন্য স্থানীয় এক মাংস বিক্রেতাকে বরাত দিয়েছিলেন খদ্দেররা। সেই চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে শ্রীঘরে ঠাঁই হল ওই মাংস বিক্রেতাকে। বেআইনিভাবে হরিণের মাংস বিক্রির চেষ্টা ভেস্তে দিয়ে রবিবার তাঁকে গ্রেপ্তার করল সুন্দরবন জেলার কুলপি থানার পুলিশ। পরে তাঁকে বনবিভাগের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
সুন্দরবন পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি জানিয়েছেন, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে কুলপি থানার সাব ইন্সপেক্টর তনুময় দাসের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল কুলপি থানার নিশ্চিন্তপুরের কাছে চৌরাস্তা মোড়ে সাদা পোশাকে অপেক্ষা করছিল। তখনই সেখানে এসে হাজির হন ওই এলাকারই বাসিন্দা প্রকাশ মাইতি নামে জনৈক মাংস বিক্রেতা। তল্লাশি চালিয়ে তাঁর কাছ থেকে পুলিশ উদ্ধার করে আট কেজিরও বেশি হরিণের মাংস। তাকে জেরা করতেই বেরিয়ে আসে আসল সত্য।
[আরও পড়ুন: হাত খুইয়েছেন স্বামী, টোটো চালিয়ে সংসারের হাল ধরেছেন কাটোয়ার পম্পা]
পুলিশি জেরার মুখে ধৃত প্রকাশ মাইতি স্বীকার করে নেন, সোমবার দোল উৎসব উপলক্ষে কয়েকজন মিলে পিকনিকের আয়োজন করে ওই এলাকায়। পিকনিকের মেনু ছিল হরিণের মাংস আর ভাত। তাই নিশ্চিন্তপুর এলাকার পাঁচ-ছ’জন যুবক তাঁকে হরিণের মাংস জোগাড় করে দেওয়ার বরাত দেয়। সেইমতোই হরিণের মাংস জোগাড় করে ওই যুবকদের কাছে বিক্রির উদ্দেশেই নিয়ে আসছিলেন তিনি। পুলিশ সুপার জানান, ওই মাংস বিক্রেতাকে হাতেনাতে পাকড়াওয়ের পর ডায়মন্ডহারবার রেঞ্জের বনবিভাগের আধিকারিকদের বিষয়টি জানানো হয়। আটক করা হয় ওই মাংস বিক্রেতাকে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে সমস্ত হরিণের মাংসও। প্রকাশ মাইতিকে বনবিভাগের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। সোমবার তাঁকে ডায়মন্ড হারবার এসিজেএম আদালতে তোলা হবে।
[আরও পড়ুন: করোনা মোকাবিলায় এবার স্টেশনগুলিতেও বিশেষ কাউন্টার, সিদ্ধান্ত রেলের]
দিন দুই আগে সুন্দরবন পুলিশ জেলার মন্দিরবাজার থানা ও বনবিভাগের আধিকারিকরা ক্রেতা সেজে মন্দিরবাজারের একটি জায়গায় হানা দেন। তাদের যৌথ অভিযানে কোটি টাকা মূল্যের পূর্ণবয়স্ক দু’টি হরিণের চামড়া উদ্ধার হয়। গ্রেপ্তার করা হয় দুই পাচারকারীকেও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডায়মন্ড হারবার রেঞ্জের বনদপ্তরের এক কর্তা জানিয়েছেন, বেশ কিছুদিন ধরেই তাঁদের কাছে খবর আসছিল, সুন্দরবন এলাকা থেকে চোরাশিকারিরা হরিণ মেরে সেই হরিণের চামড়া ও মাংস পাচার করছে। সেইমতই তাঁরা বিষয়টি নজরে রাখছিলেন। নজরদারির ফলে এখনও পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে চোরাশিকারিদের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। সতর্ক করা হয়েছে বনকর্মী এবং বনরক্ষী বাহিনীকেও।
The post দোলে বিশেষ মেনু হরিণের মাংস, খদ্দেরদের চাহিদা মেটাতে গিয়ে শ্রীঘরে বিক্রেতা appeared first on Sangbad Pratidin.
