ব্রতীন দাস, শিলিগুড়ি: বনধের ত্রয়োদশ দিনে পাহাড়ে আন্দোলনের ঝাঁজ আরও বাড়াল মোর্চা। দার্জিলিং জেলার একাধিক জায়গায় পোড়ানো হল জিটিএ চুক্তিপত্রের প্রতিলিপি। মোর্চা নেতৃত্ব জানিয়ে দিল জিটিএ এখন তাদের কাছে অতীত। শরীরে টিউবলাইট ভেঙে গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে সরব হলেন যুব মোর্চার সদস্যরা। রক্ত দিয়েই তারা পৃথক রাজ্য আদায়ে বদ্ধপরিকর। ভিড়ে ঠাসা চকবাজারে মোর্চার এই কর্মসূচি ঘিরে সতর্ক প্রশাসন। দার্জিলিং জেলার তৃণমূলের সভাপতি গৌতম দেব মোর্চার আন্দোলনের নিন্দা করেছেন।
ঘড়ির কাঁটায় বেলা ১১.১৯। পাহাড় জুড়ে মোর্চা সমর্থকরা পুড়িয়ে ফেললেন জিটিএ চুক্তির প্রতিলিপি। ২০১১ সালের ১৮ জুলাই ঠিক এই সময়ে জিটিএ চুক্তি সই হয়েছিল। তার বিরোধিতায় জন্য ১১.১৯-কেই সময় বেছে নিয়েছিল মোর্চা নেতৃত্ব। দার্জিলিং, কালিম্পং, কার্শিয়াং এমনকি যে এলাকায় জিটিএ চুক্তি হয়েছিল সেই শিলিগুড়ির পিন্টেল ভিলেজেও পুড়িয়ে দেওয়া হয় চুক্তিপত্রের প্রতিলিপি। মোর্চার কাছে এই সময়টা আরও একটি কারণে গুরুত্বপূর্ণ। ২০০৭ সালে দার্জিলিংয়ের ওল্ড সুপার মার্কেটে বেলা ১১.১৯-এ মোর্চার আত্মপ্রকাশ হয়েছিল। দার্জিলংয়ের চকবাজের বিশাল জমায়েত মোর্চার সহকারী সম্পাদক বিনয় তামাং হাজির ছিলেন। তিনি জানান, জিটিএ চ্যাপ্টার এখন ক্লোজড। তাই চুক্তিপত্র পুড়িয়ে তাদের একমাত্র লক্ষ্য গোর্খাল্যান্ড। রাজ্যে সরকার আলোচনা চাইলে শুধু গোর্খাল্যান্ড ইস্যুতেই হবে। জিটিএ চুক্তিপত্র পোড়ানোর আগে আরও একটি কর্মসূচি নেয় মোর্চা। পিঠে টিউবলাইট ভেঙে প্রতিবাদ জানায় যুব মোর্চার সদস্যরা। মোর্চার শাখা সংগঠনের বক্তব্য, তারা রক্ত দিতে ভয় পায় না। রক্ত দিয়ে তারা গোর্খাল্যান্ড আদায় করবে। যুব মোর্চা জানিয়েছে, এটা তাদের আত্মহুতি আন্দোলনের প্রথম পদক্ষেপ। এবার তারা গায়ে আগুন দেবে। ভিড়ে ঠাসা চকবাজারে যখন যুব মোর্চা শরীরে টিউবলাইট ভাঙতে ব্যস্ত, তখন নারী মোর্চা স্লোগানে মুখর হয়।
মোর্চার এই আন্দোলন ঘিরে যাতে পরিস্থিতি অশান্ত না হয় তার জন্য সজাগ প্রশাসন। চকবাজারে দমকল রাখা হয়। মোতায়েন হয় প্রচুর পুলিশ ও আধা সেনা। মোর্চার এই আন্দোলনে ক্ষুব্ধ দার্জিলিংয়ের তৃণমূল জেলা সভাপতি গৌতম দেব। তিনি জানিয়েছেন, এই আন্দোলন রক্তক্ষয়ী। আন্দোলনের পদ্ধতি অসাংবিধানিক, অগণতান্ত্রিক। প্রশাসন আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।
ছবি- সব্যসাচী ভট্টাচার্য
The post জিটিএ চুক্তিপত্র পুড়িয়ে মোর্চার ‘জেহাদ’, শরীরে টিউবলাইট ভেঙে প্রতিবাদ appeared first on Sangbad Pratidin.
