shono
Advertisement

Breaking News

মিলছে না ঠিকানা, জাহাঙ্গিরপুরী হিংসায় ধৃত বাংলার যুবকদের বাড়ি খুঁজতে এসে নাজেহাল দিল্লি পুলিশ

অভিযুক্তরা আদৌ পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা কিনা উঠছে প্রশ্ন।
Posted: 09:29 PM Apr 21, 2022Updated: 09:29 PM Apr 21, 2022

নিজস্ব সংবাদদাতা, হলদিয়া: তিন ভাইয়ের ‘আসল’ ঠিকানার খোঁজে হন্যে দিল্লি পুলিশ (Delhi Police)। আর সেই অভিযানের পরতে পরতে রহস্য। প্রতিটি বাঁকে নতুন তথ্য দিল্লির হনুমান জয়ন্তীর গোলমালের ঘটনায়। যার সঙ্গে যুক্ত সন্দেহে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত শুধু পূর্ব মেদিনীপুরের দশজনের নাম উঠে এসেছে। তারা সবাই দিল্লি পুলিশের হেফাজতে।

Advertisement

তদন্তের মধ্যে যে সব চাঞ্চল্যকর মোড় রয়েছে, তা যে কোনও রহস্য গল্পের সঙ্গে তুলনীয়। যেমন দিল্লি পুলিশ বাড়িতে ঢুকে যে সব ছবি দেখাচ্ছে অভিযুক্তদের নাম বলে, পরিবারের লোকজন অনেকেই তা মানছে না। তারা আবার পালটা ছবি পেশ করছে পুলিশের কাছে, যা দেখে দিল্লি ক্রাইম ব্রাঞ্চের (Delhi Crime Branch) ঝানু অফিসাররাও মাথা চুলকাচ্ছেন। শুধু কি তাই, দশজনের মধ্যে একই পরিবারের সহোদর যে তিন ভাইয়ের নাম রয়েছে, সেই আসলাম আলি, মুক্তার আলি এবং আকসার আলি আদতে মহিষাদলের কাঞ্চনপুরের বাসিন্দা। কিন্তু দিল্লিতে পুলিশের জেরায় গ্রামের নাম ঠিক রাখলেও জেলার নাম পালটে বাঁকুড়া বলেছে তারা। তখন দিল্লি পুলিশ যোগাযোগ করে বাঁকুড়া পুলিশের সঙ্গে। বাঁকুড়া পুলিশ জানিয়ে দেয়, এমন কোনও গ্রাম ওই জেলায় নেই। ধৃতদের বাকিদের জেরা করে আসলে তারা যে পূর্ব মেদিনীপুরের (East Midnapore) তা বুঝতে পেরেই মহিষাদলে হানা দেয় ক্রাইম ব্রাঞ্চ। তাদের বাড়িতে এসে জেরা করলে বৃহস্পতিবার ওই নামের তিনজন যে তাঁর সন্তান তা স্বীকারও করেছেন মা আসপিয়া বিবি। কিন্তু পুলিশের দেখানো ছবি তাঁর ছেলেদের সঙ্গে মিলছে না বলে পালটা অন্য ছবি দেখিয়েছেন। ফলে সন্ধ্যা গড়ালেও রহস্যের অন্ধকার কাটেনি।

[আরও পড়ুন: মন্দির তৈরির চাঁদা দিতে পারেনি দলিত যুবক, থুতু ছিটিয়ে নাকখত দিতে বাধ্য করল ‘সরপঞ্চ’]

ঘটনায় বাকি ধৃতরা সকলেই হলদিয়ার পাশাপাশি এলাকার মানুষ। কিন্তু তাদের দেওয়া ঠিকানা ধরে পুলিশ তদন্তে গেলে বেশ কয়েকজনের বাড়ির হদিশ পাওয়া মুশকিল হচ্ছে। পাড়া প্রতিবেশীরাও ভিরমি খাচ্ছে। সেই নামে এলাকায় কেউ থাকে না বলে তারা তদন্তকারীদের জানিয়েছে। যেমন শেখ সেলিম, ওরফে সোনুর বাড়ি মহিষাদলের রামবাগ বলে জানা যায়। সেই ঠিকানায় ওই নামে কেউ থাকেই না। জানান প্রতিবেশীরা। শেখ সাইদ, মহম্মদ আলি নামের দুই ধৃতের বাড়িও হলদিয়া বলা হয়েছে। হলদিয়া চষে বেড়িয়ে তাদের কোন বাড়ির খোঁজ পাওয়া যায়নি। সুতাহাটার বনগোপালপুর, এই ঠিকানাটুকু পাওয়া গেলেও ধৃত ব‍্যক্তি ভুল নাম বলেছে বলেও তদন্তকারীরা জানিয়েছেন। তেমনই নামালক্ষ‍্যার ঠিকানায় গিয়ে ধৃত শেখ জাহিদের বাড়ির হদিশ পাওয়া যায়নি। ঘটনায় মাস্টারমাইন্ড বলে হলদিয়ার কুমারপুর গ্রামের জামাই, লোহার স্ক্র‌্যাপ ব্যবসায়ী যে আনসার শেখের নাম উঠে এসেছে, গত বিধানসভা ভোট গননার দিন হলদিয়ায় একটি হামলার ঘটনায় তাকে দেখা গিয়েছে বলে দিল্লি পুলিশ একটি ভিডিও হাজির করেছে। যা এই ঘটনায় রাজনৈতিক রং লাগিয়ে দিয়েছে। দিল্লি ক্রাইম ব্রাঞ্চের এএসআই সুরেশ কুমার সরাসরি কিছু বলতে না চাইলেও দাবি করেছেন, ওই ভিডিও এবং বেশ কিছু তথ্য তাঁরা জোগাড় করেছেন। তদন্তে মূলত তিনটি বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রথমত, ধৃতদের সঙ্গে বাংলাদেশ যোগ রয়েছে কিনা। ধৃতদের পরস্পরের মধ্যে যোগাযোগ কতটা ছিল, কিংবা আদৌ ছিল কিনা। ধৃতদের রাজনৈতিক পরিচয় কী রয়েছে।

[আরও পড়ুন: বিয়ের দিন ঘোড়ায় চাপা যাবে না, নিদান উচ্চবর্ণের, বাধ্য হয়ে যা করলেন দলিত যুবক]

ধৃতদের মধ্যে আসলামের বিরুদ্ধে ২০১৯ এবং ২০২০ সালে দিল্লি পুলিশের কাছে গুরুতর অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তার মধ্যে একটি খুনের অভিযোগ রয়েছে। বাড়িতে কেউ রাজমিস্ত্রীর পরিচয় দিয়ে গেলেও দিল্লিতে কাগজ কুড়োনো, জঞ্জাল সাফাই কিংবা ছাঁট মালের ব‍্যবসা করত। রাতে অপরাধ জগতের সঙ্গে তাদের ওঠা-বসা ছিলই। ছাঁট মালের ব‍্যবসায়ী পরিচয় সামনে থাকলেও ধৃত আনসারের বিরুদ্ধে বেআইনি মদ এবং অস্ত্র ব‍্যবসার তথ‍্য প্রমাণ উঠে এসেছে। তদন্তে একটি মিল পাওয়া গিয়েছে ধৃতদের মধ্যে। তারা সকলে এক-দেড় মাস আগে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা ছেড়ে দিল্লিতে ঠাঁই নিয়েছিল। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তদন্তের কাজ ধারে-ভারে আরও বাড়তে চলছে বলে সূত্রের খবর।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement