অর্ণব দাস, বারাকপুর: স্কুলের পরিচালন সমিতির দেদার দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হওয়ায় হেনস্তার শিকার হয়েছিলেন শিক্ষিকা। আর সেই খেদ থেকে নিজেকেই শেষ করে দেন তিনি। ডানলপের বেসরকারি স্কুলে শিক্ষিকার আত্মহত্যার নেপথ্যে এমনই অভিযোগ উঠেছিল। বৃহস্পতিবার রাতে ৫৮ বছর বয়সি জসবীর কৌরের মৃত্যুর ঘটনায় স্কুল কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেছিল তাঁর পরিবার। শনিবার পরিবারের সদস্যরা ডানলপ মোড় অবরোধ করে শিক্ষিকার মৃত্যুতে সুবিচারের দাবি তুললেন। সঠিক তদন্ত এবং বিচার না হওয়া পর্যন্ত মৃত শিক্ষিকার দেহ সৎকার করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা। অভিযোগ, স্কুলের প্রিন্সিপালের নেতৃত্বে থ্রেট কালচার চলত এখানে। তারই শিকার হতে হল জসবীর কৌরকে।
৫৮ বছরের জসবীর কৌর ডানলপ ব্রিজ সংলগ্ন খালসা মডেল সিনিয়র সেকেন্ডারি স্কুলের শিক্ষিকা ছিলেন। বাড়ি দক্ষিণেশ্বর থানা এলাকার বরানগর মাতৃমন্দির লেনে। ২০০৩ সালে স্বামীর মৃত্যুর পর থেকেই শুরু স্কুলে শিক্ষকতা। গত পাঁচ বছর ধরেই স্কুলের নতুন ম্যানেজমেন্ট-সহ প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে একাধিক বেনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সোচ্চার হতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। এবং এই কারণে তাঁকে হেনস্তা ও কোণঠাসা করার চেষ্টা হচ্ছিল বলে অভিযোগ তোলে মৃত জসবীরের পরিবার। তার আগে ভিডিও বার্তায় তিনি জানান যে ন্যায়বিচার চেয়ে এই চরম সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হচ্ছেন। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে তদন্তে নেমেছে। দক্ষিণেশ্বর থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
ডানলপ মোড় অবরোধে মৃত শিক্ষিকার আত্মীয়রা।
এই পরিস্থিতিতে শনিবার শিক্ষিকার আত্মহত্যার ঘটনার সুবিচার চেয়ে ডানলপ মোড় অবরোধে নামলেন পরিবার-পরিজন সহ বহু মানুষ। দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি করেছেন মৃত শিক্ষিকার পরিবার ও আত্মীয় পরিজনেরা। তাঁদের অভিযোগ, বর্তমানে স্কুলে যিনি প্রিন্সিপাল, তাঁর নেতৃত্বে চলত 'থ্রেট কালচার'। অবিলম্বে দোষীদের শাস্তির দাবি করেন তাঁরা। যতক্ষণ না শাস্তি হবে, ততক্ষণ অবরোধ উঠবে না। অবরোধকারীর কথায়, ''এই তো সবে শুরু। যতক্ষণ না দোষীরা গ্রেপ্তার হবে, ততক্ষণ অবরোধ চলবে।'' বিটি রোড সংযোগকারী ডানলপ মোড় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। এখানে তিন দিকে রাস্তা রয়েছে। তাই এই মোড় দিনভর অবরুদ্ধ হওয়ায় তীব্র যানজট তৈরি হয়। সমস্যায় পড়েন নিত্যযাত্রীরা।
