রাজকুমার কর্মকার, আলিপুরদুয়ার: যস্মিন দেশে যদাচার। যারা যিশুর উপাসক তারাও অন্যদের অনুরোধে হয়ে গেলেন শক্তির সাধক। কথা হচ্ছে ব্রিটিশ এক সাহেবকে নিয়ে। যার নামে আস্ত জনপদ রয়েছে ডুয়ার্সের এই প্রান্তে। হ্যামিলটন সাহেবের হাত দিয়ে শুরু হওয়া আলিপুরদুয়ারের হ্যামিলটনগঞ্জ কালীবাড়ির পুজো এবার ১০১ বছরে পড়ল। পুজো উপলক্ষে হ্যামিলটনগঞ্জ কালীবাড়ির মাঠে বসে বিশাল মেলা।
[সতীর পীঠ তমলুকে বর্গভীমা পূজিতা হন দেবী উগ্রতারা রূপে]
হ্যামিলটনগঞ্জের কালীবাড়ির কালী আরাধনা দেখতে দেখতে এক শতক পেরিয়ে গেলেও, পুজো ঘিরে মেলার বয়স ৮০ বছর। কারণ পুজোর পাশাপাশি এই মেলাও এই এলাকার অন্যতম বড় আকর্ষণ। কালীবাড়ি কমিটির সম্পাদক প্রভাত মুখোপাধ্যায় বলেন, “বাকসা-ডুয়ার্স টি কোম্পানির ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায় সেই সময় ঝাড়খণ্ড থেকে আদিবাসী চা শ্রমিকদের এই এলাকায় আনা হয়েছিল। তাদের এ রাজ্যে এনে চা বাগানের পত্তন করেন ইংরেজরা।ঝাড়খণ্ডের এই শ্রমিকদের আবদার মেনে কালীপুজোর প্রচলন করেছিলেন সাহেব হ্যামিলটন। তখন পুজোর জন্য ভিনরাজ্য থেকে আনা হত প্রতিমা ও পুরোহিত।” কালিকার আরাধনায় এলাকার চা শ্রমিক, বাগান মালিক, ব্যবসায়ীদের থেকে চাঁদা তোলে কালী পুজো কমিটি। আর এই ঐতিহ্যের টানে পুজো ও মেলা উপলক্ষে নেপাল, ভুটান, নিম্ন অসম ও ডুয়ার্সের বিভিন্ন এলাকা থেকে হ্যামিলটনগঞ্জে ভক্তরা ভিড় জমান। এবছর ১৯ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর ১১ দিন মেলা হবে। মেলায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হরেক রকমের খেলার সামগ্রী, দোকান, নাগরদোলনা, চিত্রাহার নিয়ে হাজির হতে শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা।
[নামেই খেপি, ৪.৫ কেজির সোনার গহনায় সাজেন এই কালী ]
বর্তমান পুরোহিত কেদারনাথ বন্দোপাধ্যায় বলেন, “আগে মাটির প্রতিমায় পুজো হত। মন্দির কমিটি ২০০২ সালে রাজস্থানের জয়পুর থেকে নিকশ কালো কষ্ঠিপাথরের কালী মায়ের মূর্তি নিয়ে আসেন। বর্তমানে সেই মূর্তিতেই কালী পুজো হয়। নিষ্ঠা ভরে পুজো দিতে প্রতিবছর প্রচুর মানুষ কালী পুজোর সময় মন্দিরে ভিড় করেন।”
The post যিশুর ভজনা ছেড়ে শক্তির সাধনা, সাহেবের পুজোয় মাতোয়ারা হ্যামিলটনগঞ্জ appeared first on Sangbad Pratidin.
