রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: বছর শেষে পর্যটকদের ঢেউ আছড়ে পড়ছে দিঘায়! বড়দিন থেকেই সেখানকার হোটেলগুলোয় ক্রমশ ভিড় বাড়ছে। শুরু হয়ে গিয়েছে বছর শেষের কাউন্টডাউনও। সেই সঙ্গে বাড়ছে পর্যটকদের ভিড়। ইতিমধ্যে বাঙালির প্রিয় ডেস্টিনেশন দিঘায় থাকা হোটেলগুলিতে হাউসফুল হতে শুরু করেছে। আগাম হোটেল বুকিংয়ের জেরে এখন তিলধারণের জায়গা নেই ওল্ড ও নিউ দিঘার হোটেলগুলিতে। হোটেল মালিকদের একাংশ বলছেন, এ বার নতুন রেকর্ড গড়ে ইতিহাস রচনা করতে চলেছে পূর্ব মেদিনীপুরের এই সৈকতশহর।
আর এই ভিড়ের কথা মাথায় রেখেই দিঘা শংকরপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে আগামী ৩০ এবং ৩১ ডিসেম্বর ওল্ড দিঘার সমুদ্র সৈকতে বীচ ফেস্টিভ্যালের আয়োজন করা হয়েছে। যেখানে পর্যটকদের আনন্দ দিতে একঝাঁক শিল্পীরা উপস্থিত থাকবেন। সাংস্কৃতির সন্ধ্যার পাশাপাশি নতুন বছরকে বরণ করতে বছরের শেষদিন অর্থাৎ ৩১ ডিসেম্বর রাত ১২টায় আতসবাজীর প্রদর্শনীর ব্যবস্থা থাকছে। যা পর্যটকদের কাছে বাড়তি পাওনা হতে চলেছে। এখানেই শেষ নয়, দীঘা, মন্দারমণির একাধিক হোটেলে ডিজে নাইটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এমনকী বলিউড, টলিউডের শিল্পীদের নিয়ে এসে সঙ্গীত সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়েছে।
বর্ষবরণের রাতে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ইতিমধ্যে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। দিঘার পাশাপাশি মন্দারমণিতেও বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তাছাড়া কোন পর্যটক সমস্যায় পড়লে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরেও অভিযোগ জানাতে পারবেন। দীঘা-শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী বলেন, '' আগামী ১ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রত্যেকটি হোটেলের বুকিং হয়ে গিয়েছে। যে কয়েকটি ঘর বাকি আছে, তা পাওয়ার জন্য কার্যত প্রতিযোগিতা চলছে পর্যটকদের মধ্যে। তবে আশাকরী সকলেই পরিষেবা পাবেন।''
ওল্ড দিঘার সমুদ্র সৈকতে বীচ ফেস্টিভ্যালের আয়োজন।
পর্যটকদের সুবিধার্থে এখন ওল্ড ও নিউ দীঘা মিলিয়ে প্রায় ৮০০টির বেশি হোটেল পরিষেবা দিচ্ছে। গত কয়েক বছরে বেশ কিছু ঝাঁ-চকচকে আধুনিক হোটেল তৈরি হয়েছে, যেখানে আধুনিক মানের পরিষেবা কয়েক গুণ বেড়েছে। ফলে ভিড় বাড়লেও পর্যটকদের ঘর পেতে আগের মতো কালঘাম ছুটবে না বলেই আশাবাদী দীঘা-শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী।
শুধু কলকাতা নয়, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেই পর্যটকরা ভিড় জমাচ্ছেন সৈকত শহরে। আসছে রাজ্যের বহু মানুষও। ইতিমধ্যে বাস এবং প্রাইভেট গাড়ির লম্বা সারি দেখা গিয়েছে দীঘার রাস্তায়। তা ছাড়া ট্রেনেও প্রচুর মানুষ আসছেন। বর্ষবরণের আগে দিঘায় এমন ভিড়ের পিছনে সদ্য তৈরি হওয়া জগন্নাথ মন্দির বলেই মনে করছেন হোটেল মালিক থেকে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। তাছাড়া নতুন বছরের প্রথমদিন জগন্নাথ দেবকে পুজো দিয়ে বছর শুরু করতে চাইছেন অনেকেই। তাই আগামিদিনগুলিতে ভিড় আরও বাড়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
