সোমনাথ পাল, বনগাঁ: মাত্র ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকায় যমজ কন্যা সন্তানকে বিক্রি। বিক্রির অভিযোগ উঠল খোদ বাবার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত রতন ব্রহ্মকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। স্থানীয় মহিষাকাঠি ও শিমুলপুরে তল্লাশি চালিয়ে দুই শিশুকন্যাকে উদ্ধার করা হয়েছে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে গাইঘাটা থানার ভাদুরিয়া গ্রামে।
জানা গিয়েছে, পেশায় দিনমজুর রতন ব্রহ্মের অভাবের সংসার। সংসারের হাল ফেরাতে কাপড়ের ব্যবসাও শুরু করেছিল সে। তবে তাতেও লাভ হয়নি । বরং মোটা টাকা দেনা ঘাড়ে চেপে বসে। বাধ্য হয়েই ব্যবসা থেকে হাত গুটিয়ে নেয় রতন। এদিকে ব্যবসা বন্ধ করে দিলেও পাওনাদাররা পিছু ছাড়ছিল না। কোনও উপায় দেখতে না পেয়ে শেষে নিজের দুই যমজ শিশুকন্যাকেই বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয় ওই ব্যক্তি। সেই মতো মাসখানেক আগে গাইঘাটার মহিষাকাঠির বাসিন্দা অমল ঘোষকে একটি মেয়ে ও শিমুলপুরের বাসিন্দা কৃষ্ণকান্ত দাসের কাছে আর এক মেয়েকে বিক্রিও করে দেয় বলে অভিযোগ। বিনিময়ে হাতে আসে ১লক্ষ ৮০হাজার টাকা। নিজের দুই শিশুসন্তানকে বিক্রির খবর চেপে রাখতে কসুর করেনি রতন। তাই প্রায় একমাস পেরিয়ে গেলও এলাকার কেউই কিছু টের পাননি।
[চাঁদার জুলুমবাজদের খপ্পরে পড়েও পুলিশের বদান্যতায় শেষরক্ষা ব্যবসায়ীর]
এদিকে গোপনসূত্রে শিশুকন্যা বিক্রির খবর পায় গাইঘাটা থানার পুলিশ। রবিবার সন্ধ্যাতেই ভাদুরিয়া গ্রামে বাড়ি থেকেই রতনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বাড়ি থেকেই ১ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা উদ্ধার হয়। জেরায় রতন জানান, তার পেটে আলসার। বাড়িতে এক কন্যাসন্তান। তার উপরে ফের যমজ কন্যার জন্ম হতেই মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। কী করে তিন তিনটি মেয়েদের বড় করে পাত্রস্থ করবে ভেবেও কূলকিনারা পায়নি। তাই দেনা মেটাতে দুই শিশুকন্যাকে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়। মাসখানেক আগে টাকাও পেয়ে গিয়েছে। তবে যাঁদের কাছে মেয়েদের বিক্রি করেছে, তাঁরা সম্পন্ন গৃহস্থ। দু’জনেরই সন্তান আত্মঘাতী হয়েছে। সেখানে মেয়েরা আশ্রয় পেলে ভালই থাকবেন ওই দুই শিশুকন্যা। অন্যদিকে অমল ঘোষ এবং কৃষ্ণকান্ত দাসকেও জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
