সুব্রত বিশ্বাস: মানসিক ভারসাম্য বিশেষ না থাকলেও গাছে চড়ার নেশা প্রবল। গাছ না পেয়ে শেষমেশ ওভারহেড তারবাহী মাস্টেই চড়ে বসল এক যুবক। শত অনুরোধ সত্ত্বেও মাস্ট থেকে নামতে নারাজ সে। বিপজ্জনক পরিস্থিতি কীভাবে সামাল দেওয়া যায়, সেই উপায় বের করতে রেল আধিকারিকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ। শেষ পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দিতে রক্ষা পেল যুবক। কিন্তু এক বিপদ কাটতে না কাটতে শুরু অন্য সমস্যা। গাছ, থুড়ি মাস্টের উপর চেপে বসা যুবক তখন ডালে ডালে ঘুরে বেড়ানোর আদলে এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত ছুটে চলেছে। অন্যদিকে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে থেমে গিয়েছে একের পর এক ট্রেন। টানা দু’ঘণ্টা ধরে কার্যত সিনেমার মতো ঘটনা চলল আসানসোল স্টেশনে (Asansol Station)।
বৃহস্পতিবার বিকেল চারটে নাগাদ ঘটনার সূত্রপাত। আসানসোল স্টেশনের শেষ প্রান্তের মাস্টে চড়ে বসে দক্ষিণ ভারতের বাসিন্দা ওই যুবক। যাত্রীদের চোখে পড়তেই গেল গেল রব শুরু হয়ে যায়। আরপিএফ (RPF), জিআরপি (GRP) ছুটে আসলেও তাকে নামানো সম্ভব হয়নি। বাবা-বাছা বলেও যখন কাজ হয়নি, তখন ২৫ হাজার ভোল্টবাহী মাস্টে চড়া মানসিক ভারসাম্যহীন যুবককে বাঁচাতে বন্ধ করে দেওয়া হয় বিদ্যুৎ সংযোগ। সঙ্গে সঙ্গে দাঁড়িয়ে পড়ে আপ বালিয়া এক্সপ্রেস ও ডাউন ব্ল্যাক ডায়মন্ড এক্সপ্রেস। দুই ট্রেনের পিছনে আরও বেশ কয়েকটি ট্রেন দাঁড়িয়ে পড়ে।
[আরও পড়ুন: রাজ্যের শিক্ষাসচিব মণীশ জৈনের ফ্ল্যাট থেকে পরিচারিকার দেহ উদ্ধার, কীভাবে মৃত্যু, তদন্তে পুলিশ]
অবস্থা সামাল দিতে খবর দেওয়া হয় টাওয়ারভ্যানকে। ওই যুবককে নামানোর বহু চেষ্টা করে তারা। কিন্তু তখনও মাস্টের নানা প্রান্তে ছুটে বেড়াচ্ছে সে। অবশেষে দু’ঘণ্টার চেষ্টায় তাকে বাগে আনা সম্ভব হয়। মাস্ট থেকে নামিয়ে ওই যুবককে হাসপাতালে নিয়ে যায় জিআরপি। গোটা সময় ধরে একেবারে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে আসানসোল স্টেশন। দীর্ঘ দু’ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আপ ও ডাউনে আটকে থাকে বেশ কিছু ট্রেন। ক্ষিপ্ত হয়ে পড়েন ট্রেনে আটকে পড়া যাত্রীরা।
রেলের ব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়ে তাঁরা বলেন, গুরুত্বপূর্ণ একটি স্টেশনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা এতটাই পলকা যে মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক ওভারহেডের তারবাহী মাস্টে উঠে পড়ে। ওই যাত্রীর মৃত্যুও ঘটতে পারতো মাস্টে উঠে। অন্যদিকে, জিআরপি জানিয়েছে ওই যুবক দক্ষিণ ভারতের বাসিন্দা। ভাষার জন্য তার কথা বুঝতে যথেষ্ট অসুবিধা হওয়ায় মাস্টে ওঠার প্রকৃত কারণ বোঝা যায়নি। তবে মানসিকভারসাম্যহীন বলে মনে করা হচ্ছে ব্যবহারেই।
