জ্যোতি চক্রবর্তী, বসিরহাট: হাতে মেহেন্দি আর গলায় মালা। তার সঙ্গে কপালে চন্দনের ফোঁটা দিয়ে বিয়ের পিঁড়িতে বসে রয়েছে কনে৷ তার সামনে গলায় মালা ও মাথায় টুপি পরে বসে রয়েছে পাত্র। মুসলিম শরিয়তে নিয়ম মেনে বিয়ে করাচ্ছে কাজী। আর সুস্বাদু রান্নার গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে বসিরহাটের উপ সংশোধনাগারে। এভাবেই বৃহস্পতিবার দুপুরে বসিরহাট উপ সংশোধনাগারে বন্দি থাকা এক যুবকের সঙ্গে নির্যাতিতার বিয়ের সাক্ষী রইলেন পুলিশকর্তা থেকে আদালতের আইনজীবীরা।
পাত্রের নাম মইদুল গাজি। পেশায় শ্রমিক ওই যুবকের বাড়ি হাসনাবাদ থানার চকপাটলি গ্রামে। আর পাত্রী একই গ্রামের মমতাজ খাতুন। বাড়ি। কয়েক মাস আগে সে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের অভিযোগ এনেছিল পাত্রের বিরুদ্ধে। এরপর তাকে গ্রেপ্তার করে হাসনাবাদ থানার পুলিশ। তারপর থেকে জেলেই ছিল মইদুল। আর সেখানে বসেই নির্যাতিতাকে বিয়ে করার কথা আদালতে জানিয়েছিল সে৷ এরপর বৃহস্পতিবার আদালতের নির্দেশে বিয়ের আয়োজন হল উপ সংশোধনাগারে।
[আরও পড়ুন:‘হুগলি নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করতে যাচ্ছি’, সুইসাইড নোট লিখে নিখোঁজ ছাত্র ]
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মমতাজ ও মহিদুল একই গ্রামের বাসিন্দা। দীর্ঘদিন ধরে তাদের মধ্যে ভালবাসার সম্পর্ক ছিল। মাস কয়েক আগে মমতাজ বিয়ে করার কথা মহিদুলকে বললে সে অস্বীকার করে। এরপর ২০১৯ সালের ৮ ডিসেম্বর হাসনাবাদ থানার দ্বারস্থ হয় মমতাজ। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের অভিযোগ করে মহিদুল গাজির বিরুদ্ধে। তবে বৃহস্পতিবার সেই সব অভিযোগ ভুলে নতুন করে পথচলা শুরু করল তারা।
[আরও পড়ুন: তত্ত্বের ডালি হাতে মনের কথা প্রকাশ, সরস্বতী পুজোয় আজও অটুট বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য ]
বসিরহাট উপ সংশোধনাগার সূত্রে জানা গিয়েছে, এই সংশোধনাগারের এই প্রথম বিয়ে হচ্ছে। তাই বিয়ের আসরে শামিল হয়েছে সংশোধনাগারে থাকা কয়েদিরাও। বিয়ের জায়গার পাশেই চলছে খাওয়া-দাওয়ার অনুষ্ঠান। মেনুতে রয়েছে ভাত, মুড়িঘণ্ট, ডাল, বেগুনি, মাছ, চিকেন কষা, চাটনি, পাঁপড়, রসগোল্লা ও সন্দেশ। কবজি ডুবিয়ে খাওয়া-দাওয়া করল বিশিষ্ট অতিথি-সহ জেলবন্দি কয়েদিরা। খাওয়া শেষে তারা দুহাত ভরে আশীর্বাদ করল পাত্র-পাত্রীকে। আর বিয়ে শেষে একগাল হাসি নিয়ে বাড়ি ফিরল নব দম্পতি।
The post আদালতের নির্দেশে সংশোধনাগারেই বসল আসর, নির্যাতিতাকে বিয়ে অভিযুক্ত যুবকের appeared first on Sangbad Pratidin.
