স্টাফ রিপোর্টার: উত্তর ভিজছে স্বস্তির বৃষ্টিতে। দক্ষিণ ভিজছে ঘামে। আর ঘেমো দক্ষিণবঙ্গের জন্য কোনও স্বস্তির বৃষ্টির বার্তা দিতে পারছে না আলিপুর হাওয়া অফিস। আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, জেলায় জেলায় ঝড়বৃষ্টি হলেও তা তাপমাত্রার গায়ে আঁচড় কাটতে পারবে না। এই বৃষ্টি সাময়িক স্বস্তি দেবে বলে জানিয়ে দিয়েছে আলিপুর হাওয়া অফিস। আবহাওয়া দপ্তরের আধিকারিক সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ভারী বৃষ্টির কোনও পূর্বাভাস নেই। কোথাও কোথাও স্থানীয়ভাবে বজ্রগর্ভ মেঘে হালকা থেকে মাঝারি মাপের বৃষ্টি হতে পারে। তবে তাতে তাপমাত্রার কোনও হেরফের হবে না। বরং আগামী ৪৮ ঘণ্টায় তাপমাত্রা বাড়বে। তাপপ্রবাহের কবলে পড়তে পারে পশ্চিমের জেলাগুলি।”
[আরও পড়ুন: রাস্তা সম্প্রসারণের নামে পূর্ব বর্ধমানে নির্বিচারে বৃক্ষনিধন, ক্ষুব্ধ পরিবেশপ্রেমীরা]
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, “বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি, নদিয়ার পারদ স্বাভাবিকের থেকে দুই-তিন ডিগ্রি বাড়ার সম্ভাবনা। তাপপ্রবাহের পূর্বাভাস পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পূর্ব-পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, পূর্ব মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, মুর্শিদাবাদে। বাদ যাবে না মালদহও।” এদিন দপ্তরের এক আবহাওয়াবিদ বলেন, কলকাতা-সহ আশপাশের জেলাগুলিতে ঝড়বৃষ্টির জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিলেও খামখেয়ালি প্রকৃতির মর্জির উপর ভরসা রাখতে পারছেন না দপ্তরের কর্তারা। দপ্তরের আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, মেঘ করছে ঠিকই কিন্তু মেঘের ঘনত্ব কম থাকায় তা দানা বাঁধতে পারছে না। ফলে জেলাগুলি বৃষ্টির মুখ দেখছে। কিন্তু মেঘের জোট শক্তপোক্ত না থাকায় তা কলকাতা অবধি এসে পৌঁছচ্ছে না। বৃষ্টি থেকে বেশিরভাগ দিনই বঞ্চিত থেকে যাচ্ছে মহানগর।
চলতি বছর লোকসভা ভোট শুরু হয় প্রখর গ্রীষ্মের আবহেই। পঞ্চম দফাকে বাদ দিলে প্রতিটি দফাতেই কার্যত গলদঘর্ম হতে হয়েছে। শুধুমাত্র পঞ্চম দফার আগে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’-র দৌলতে কিছুটা তাপমাত্রার পারদ নেমেছিল। এরপর চড়তে শুরু করে তাপমাত্রা। এদিনও তার অন্যথা হয়নি। সঞ্জীববাবুর কথায়, রাজ্যের আশপাশে কোনও প্রাকৃতিক অনুষঙ্গ নেই। কিন্তু দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে আসা জোলো হাওয়ার জোগান ভরপুর। ফলে আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি বজায় থাকবে। এই জোলো হাওয়ার কারণে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলির তাপমাত্রা সেভাবে বাড়তে পারেনি। শহর কলকাতায় দিনভর দাপট দেখিয়েছে সমুদ্রের দিক থেকে বয়ে আসা জোলো হাওয়া। স্বভাবতই আর্দ্রতার সন্ত্রাসে কাহিল শহরবাসী।
[আরও পড়ুন: পাশের হারে নজির গড়ল চলতি বছরের মাধ্যমিক, কলকাতাকে পিছনে ফেলল জেলার পড়ুয়ারা]
চলতি বছর শুরু থেকে সেভাবে খোলস ছাড়েনি গ্রীষ্ম। মার্চ মাসে দু’-একদিন ছাড়া তাপমাত্রা মাথাচাড়া দেয়নি। এপ্রিলে বেশিরভাগ দিনই ঝড়জলে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের নিচে ছিল। মে মাসে শহর দুটো কালবৈশাখীর একটিও এখনও পায়নি। ফলে গরমের আবহ বজায় রয়েছে। দপ্তরের এক আবহাওয়াবিদ এদিন বলেন, গরম বস্তুটা আসলে কী, মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে এসে হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে কলকাতা। একদিকে চাঁদি ফাটা রোদে চোখ-মুখে জ্বালা ধরছে। অন্যদিকে ঘেমে-নেয়ে একাকার হতে হচ্ছে। রাস্তাঘাটে বেরিয়ে অসুস্হ হয়ে পড়ছেন অনেকে। প্রসঙ্গত, চলতি বছর ৪ জুন কেরলে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু প্রবেশ করার কথা। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে কেরলে ঢোকার সাতদিন পরে এ রাজ্যে ঢোকার কথা বর্ষার। এখন সেদিকে তাকিয়েই আবহাওয়াবিদ থেকে আম আদমি।
The post স্থানীয় মেঘে বৃষ্টি হলেও কমবে না তাপমাত্রা, জানাল হাওয়া অফিস appeared first on Sangbad Pratidin.
