গোবিন্দ রায়: গত সপ্তাহে আর্জেন্টাইন তারকা, বিশ্বকাপজয়ী লিওনেল মেসির কলকাতা সফরে যে নজিরবিহীন বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়, সেই ঘটনার তদন্তে পুলিশের কাজে হস্তক্ষেপ করল না কলকাতা হাই কোর্ট। সোমবার এই সংক্রান্ত শুনানিতে হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুজয় পালের বেঞ্চ ১৭ পাতার রায়ে স্পষ্ট জানিয়েছে, এখন তদন্তের প্রাথমিক পর্যায়। এই অবস্থায় হাই কোর্ট এই তদন্তে হস্তক্ষেপ করছে না। আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি ফের মামলার পরবর্তী শুনানি। উচ্চ আদালতের এই রায়েই স্পষ্ট, পুলিশি তদন্ত নিয়ে বিরোধীদের যতই আপত্তি থাকুক, আদালত ভরসা রাখছেই।
গত ১৩ ডিসেম্বর যুবভারতীতে লিওনেল মেসির আগমন ঘিরে বেনজির বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সাক্ষী থেকেছে কলকাতাবাসী। চড়া দামে টিকিট কাটা সত্ত্বেও আর্জেন্টাইন তারকাকে ঘিরে থাকা 'ভিআইপি'-দের দুর্গ ভেদ করে তাঁকে দেখতে পাননি অনুরাগীদের একটা বড় অংশ। তা নিয়ে বিক্ষোভের জেরে পরিস্থিতি এমন হয় যে মেসিকে কিছুক্ষণের মধ্যেই মাঠের বাইরে চলে যেতে হয়। এতে আয়োজকদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত গাফিলতির অভিযোগ ওঠে। গ্রেপ্তার হন মূল আয়োজক শতদ্রু দত্ত। জবাবদিহির মুখে পড়তে হয় রাজ্য পুলিশের ডিজিকেও। সাসপেন্ড হতে হয় বিধাননগর পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিককে। ঘটনার তদন্তে রাজ্যের দক্ষ আইপিএসদের নিয়ে তৈরি হয় সিট। আর এই সিটের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আদালতের দ্বারস্থ হন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আরও কয়েকজন জনস্বার্থ মামলা দায়ের করে দাবি তোলেন, এই তদন্ত সিবিআইকে দিয়ে করানো হোক।
কিন্তু সোমবার জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে সিবিআই তদন্তের আবেদন খারিজ করে দিল হাই কোর্ট। পর্যবেক্ষণে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুজয় পাল ও বিচারপতি পার্থসারথী সেন জানান, আইন মেনে সিট গঠন করা হয়েছে। পুলিশের কাজ তদন্ত করা, সেই কাজ চলছে। প্রাথমিক স্তরে তদন্তের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন আসে না। সিটকে তার কাজ করতে দেওয়া উচিত বলেই মনে করেন বিচারপতিরা। তাই এনিয়ে এখনই কোনও হস্তক্ষেপ করছে না হাই কোর্ট। আদালতের এই পর্যবেক্ষণ নিঃসন্দেহে পুলিশের দক্ষতাকেই ফের প্রকাশ্যে আনল।
