শ্রীকান্ত পাত্র: এ যেন উলট পুরাণ! বৈষ্ণব মতে মায়ের পুজো। কিন্তু চাই আস্ত একটি পোনা মাছের ঝোল। এই প্রথা মেনে প্রায় ১০০ বছর ধরে জগদ্ধাত্রীপুজো চলে আসছে ক্ষীরপাইয়ের চক্রবর্তী পরিবারে। প্রায় একশো বছর আগে নিজের পরিবারের শ্রীবৃদ্ধি কামনায় জগজ্জননী জগদ্ধাত্রীর পুজো শুরু করেছিলেন শশধর চক্রবর্তী। তিনি ছিলেন অত্যন্ত দরিদ্র নিষ্টাবান ব্রাহ্মণ। কিন্তু মায়ের পুজো শুরু করলেও পরিবারের শ্রী ফেরেনি। ফলে এক সময় চক্রবর্তী পরিবারে মায়ের পুজো বন্ধ হয়ে যায়।
কিন্তু চক্রবর্তী পরিবার থেকে মা ছেড়ে যেতে চাননি বলেই পরিবারের দাবি। সেই বছরই মা জগদ্ধাত্রী শশধরবাবুর দুই পুত্র শম্ভুনাথ ও বিশ্বনাথকে স্বপ্নাদেশ দিয়ে জানিয়ে দেন পুজো চালিয়ে যেতে। আর তাহলেই তাঁদের হাল ফিরবে। মায়ের স্বপ্নাদিষ্ট হয়ে ফের পরিবারে শুরু হয় মা জগদ্ধাত্রীর পুজো। ধীরে ধীরে চক্রবর্তী পরিবারে ধন সম্পদ ভরে উঠতে শুরু করে। তারপর থেকেই জাঁকজমক করে পুজো শুরু হয়। মায়ের স্বপ্নাদিষ্ট শম্ভুনাথবাবু মায়ের সেই স্বপ্নের কথা আজও স্মরণ করেন। তিনি বলেন, “মা জগদ্ধাত্রী আমাদের দুই ভাইকে স্বপ্নাদেশ দিয়েছিলেন তা অক্ষরে অক্ষরে মিলে গিয়েছিল। মায়ের কৃপায় আমরা সবাই ভালই আছি।”
আগামী বুধবার মায়ের পুজো হবে চক্রবর্তী পরিবারে। সুর্য ওঠার আগে শুরু হয়ে যাবে মায়ের পুজো। চার প্রহরের চার বার হবে পুজো। প্রতিবারেই নতুন করে পায়েস, খিঁচুড়ি, মিষ্টি মিষ্টান্ন, তরি তরকারি দিয়ে মায়ের পুজো দিতে হয়। কিন্তু আস্ত একটা পোনা মাছের ঝোল চাইই চাই। মা নিরামিশাষী। তাই চার প্রহরে চারবার চারটি চালকুমড়ো বলি দিতে হয়। রাতেই মায়ের বিসর্জন দিতে হয়। চক্রবর্তী পরিবারের অন্যতম সদস্য গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “আমাদের মা খুব জাগ্রত। আমাদের পুর্বপুরুষ খুবই আর্থিক সমস্যায় ছিলেন। এক সময় পুজো বন্ধও হয়ে যায়। কিন্তু মায়ের স্বপ্নাদেশে ফের পুজো শুরু হয়। এখন আমরা মায়ের কৃপায় ভালই আছি। এই যা দেখছেন তা সবই মা জগদ্ধাত্রীর কৃপায়।”
[আরও পড়ুন: অধীরদার ডবল হ্যাটট্রিক দেখে যেতে পারলাম না! সুইসাইড নোটে আক্ষেপ যুবকের]
The post জগদ্ধাত্রীর প্রসাদে পাবেন পোনা মাছের ঝোল, জানেন কোথায়? appeared first on Sangbad Pratidin.
