ধীমান রায়, কাটোয়া: রাতারাতি বদলে গেল রেলস্টেশনের নাম। তার আগে ঘুণাক্ষরেও জানতে পারলেন না রেলযাত্রীরা। পূর্ব রেলের বর্ধমান-সাহেবগঞ্জ লুপ লাইনে আউশগ্রাম (Aushgram) এলাকার ‘বনপাস’এর নাম বদলে গিয়ে হল ‘পাহাড়গঞ্জ হল্ট’! আর এই নতুন নাম নিয়ে রীতিমতো বিভ্রান্ত বহু রেলযাত্রী। এক নিত্যযাত্রী সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social Media) বদলে যাওয়া নামফলকের ছবি পোস্ট করে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন।
কিন্তু বিষয়টি ঠিক কী? জানা গিয়েছে, বনপাস স্টেশনের এই নামবদল কেবলমাত্র তিনদিনের জন্য। ২৮ মার্চ থেকে ৩০ মার্চ – এই তিনদিন ধরে বনপাস স্টেশনে একটি বাংলা সিনেমার শুটিং (Shooting) চলছে। পরিচালক পৃথা চক্রবর্তীর পরিচালনায় সিনেমার নাম ‘পাহাড়গঞ্জ হল্ট’। এই প্রেমের ছবিতে জুটি বেঁধেছেন ঋত্বিক চক্রবর্তী এবং পাওলি দাম। এছাড়াও এই ছবিতে অভিনয় করছেন খরাজ মুখোপাধ্যায়, শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়, বাসবদত্তা চট্টোপাধ্যায়, সোহাগ সেনের মতো অভিনেতা-অভিনেত্রীরা।
রেলের অনুমতি নিয়েই তিনদিনের জন্য বনপাস স্টেশনে সেট সাজিয়েছেন পরিচালক। তাই বদলেছে নামফলক। এই শুটিং ঘিরে এলাকার মানুষের কৌতূহলের মাঝে শুরু হয়েছে বিতর্কও। কারণ স্থানীয়দের একাংশের বক্তব্য, এমন নামবদলের বিষয়ে যাত্রীদের উদ্দেশে আগাম জানানো উচিত ছিল। কারণ, এই স্টেশনে রেলযাত্রীরা বিভ্রান্ত হচ্ছেন। বিল্বগ্রামের বাসিন্দা অসিত ভট্টাচার্য নামে এক নিত্যযাত্রী সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন। তিনি লেখেন, ‘বনপাস’ স্টেশনের নাম রাতারাতি পালটে গিয়ে হল ‘পাহাড়গঞ্জ হল্ট স্টেশন।’
[আরও পড়ুন: ‘২৩ বছরে কখনও শান্তি পাইনি’, স্বামীকে খুনের পর স্বীকারোক্তি স্ত্রীর]
খুব ভাল কথা। কিন্তু দুর্ভাগ্য, এ বিষয়ে রেল কর্তৃপক্ষ বা দায়িত্বশীল জনসংযোগ আধিকারিকের (CPRO) পক্ষ থেকে জনগণের কাছে আগাম কোনও প্রচার বা নির্দেশিকা কেন দেওয়া হল না। পূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারিক বা সেফটি অফিসারের বা রেল কর্তৃপক্ষের এ বিষয়ে একটু বোঝা উচিত ছিল যে, রেল কেবলমাত্র লাভার্জনের জায়গা নয় বা স্ফূর্তি করার জায়গা নয়। ভারতীয় রেল হল মূলত সেবামূলক প্রতিষ্ঠান।” এলাকার বাসিন্দা অশোক সর বলেন, “স্টেশনের টিকিট কাউন্টারে টিকিট কাটতে গিয়ে তাদের সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। শুটিং হওয়ার নিরাপত্তা রক্ষীরা বাধা দিচ্ছে। নিরাপত্তার কড়াকড়িতে অনেকেরই সমস্যা হচ্ছে।”
[আরও পড়ুন: ‘চিরকুটে চাকরি পাওয়া চোর-ডাকাত’, DA আন্দোলনকারীদের তীব্র আক্রমণ মমতার]
বনপাস স্টেশন ম্যানেজার আনন্দ কুমার বলেন, “২৮ মার্চ থেকে ৩০ মার্চ এই তিনদিনের জন্য এখানে সিনেমার শুটিং চলছে। তাই স্টিকার দিয়ে নাম লেখা হয়েছে পাহাড়গঞ্জ হল্ট। সকাল ৭ টা রাত ৯ টা পর্যন্ত শুটিং হচ্ছে। রেলের উচ্চ আধিকারিকের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে এখানে শুটিংয়ের কাজ চলছে।” পাশাপাশি স্টেশন ম্যানেজারের দাবি, স্টেশন বুঝতে যাতে যাত্রীদের কোনও অসুবিধা না হয়, তার জন্য ট্রেনগুলি এখানে বেশি সময়ের জন্য স্টপেজ দেওয়া হচ্ছে। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ”তিনদিন ওখানে শুটিং হবে। তবে সমস্যা হলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”