বাবুল হক, মালদহ: ছবি তোলায় এবার পুলিশ ফাঁড়ির ওসির মোবাইল কেড়ে নিয়ে বিতর্কে জড়ালেন জাতীয় শিশু সুরক্ষা অধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান প্রিয়ঙ্ক কানুনগো। শুক্রবার ঘটনাটি মালদহের ইংরেজবাজারে। শুধু তা-ই নয়, বিতর্কের পারদ আরও কিছুটা চড়িয়েছে বিজেপি বিধায়ককে সঙ্গী করে তাঁর মালদহের সরকারি কর্মসূচি। এনিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল।
জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান-সহ চারজনের এক প্রতিনিধিদল মালদহে আসে। শুক্রবার দুপুরে তাঁরা ইংরেজবাজারের বাঁধাপুকুর গ্রামে যান। সেই গ্রামে সম্প্রতি দাম্পত্যে কলহের জেরে পারিবারিক একটি সংঘর্ষে দুই মহিলা-সহ তিনজন খুন হন। শ্বশুরবাড়ি থেকে স্ত্রীকে আনতে গিয়ে বচসার জেরে দুই মহিলাকে কুপিয়ে খুন করেছিল জামাই। অভিযুক্ত জামাইকেও পালটা পিটিয়ে মারা হয়েছিল বলে খবর। এদিন ওই বাড়িতে পৌঁছন জাতীয় শিশু সুরক্ষা অধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান প্রিয়াঙ্ক কানুনগো। সঙ্গে ছিলেন ইংরেজবাজারের বিজেপি বিধায়ক শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরিও। এখানেই আপত্তি তৃণমূলের।
[আরও পড়ুন: অবাক ডাকাতি! দু’লক্ষ টাকার চুল নিয়ে পালানোর সময় হাতেনাতে ধরা পড়ল ৫]
জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যানের সঙ্গে বিজেপি নেত্রী কেন? সেই বাড়িতেই তাঁদের ছবি মোবাইলে বন্দি করছিলেন রথবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির ওসি সত্যব্রত ভট্টাচার্য বলে অভিযোগ। তাঁকে ছবি তুলতে দেখে তাঁর মোবাইল ফোনটি কেড়ে নেন প্রিয়ঙ্ক। তিনি মোবাইলটি নিয়ে শহরে চলে আসেন। এরপর মালদহের যুব আবাস ভবনে প্রথম জাতীয় শিশু সুরক্ষা অধিকার কমিশনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ‘অভিযোগ নিষ্পত্তি শিবিরে’ যোগ দেন কানুনগো।
জাতীয় শিশু সুরক্ষা অধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান প্রিয়ঙ্ক কানুনগো সেখানে সাংবাদিকদের বলেন, “পুলিশ আমার বিরুদ্ধে গোয়েন্দাগিরি করছে। আমার গতিবিধির উপরে নজর রাখছে। কোনও অনুমতি না নিয়েই একজন পুলিশ অফিসার আমাদের ছবি তুলেছেন। তাই তাঁর ফোনটি কেড়ে নেওয়া হয়েছে। দেখি, জেলাশাসক কিংবা পুলিশ সুপার আসছেন কি না!”
পুলিশ আধিকারিকের মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়ার ঘটনায় প্রশাসনিক মহলেও বিতর্ক তৈরি হয়েছে। যাঁর মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয়েছে, সেই পুলিশ আধিকারিক সত্যব্রত ভট্টাচার্য বলেন, “ওঁর নিরাপত্তার কারণেই ছবি তোলা হচ্ছিল। এর সঙ্গে অন্য কোনও বিষয় নেই।” মালদহের জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া এই বিষয়ে বলেন, ‘‘পুলিশের মোবাইল কেড়ে নিয়েছেন, সেটা আমিও শুনেছি। বিষয়টি পুলিশ সুপার দেখবেন।’’ যদিও এই বিষয়ে মালদহের পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদবের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোন ধরেননি তিনি।