সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: প্রতিবেশীকে বাবা পরিচয় দিয়ে ২০০২ সালের ভোটার লিস্টে নাম তুলেছিলেন বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে কাকদ্বীপে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদে তৃণমূলের এক সদস্যের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ওঠায় শোরগোল পড়ে যায়। যদিও অভিযোগ খণ্ডন করে ওই জেলাপরিষদ সদস্য অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক অভিসন্ধি বলেই জোরের সঙ্গে দাবি করেন। অভিযোগকারীর অভিযোগ ও তাঁর বিপক্ষে অভিযুক্ত যে পাল্টা দাবি করেছেন, দু'য়েরই তদন্ত শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন।
কাকদ্বীপের প্রতাপাদিত্য গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর গোবিন্দপুরের বাসিন্দা বাসুদেব দাসের অভিযোগ, তাঁকে বাবা পরিচয় দিয়ে ভোটারলিস্টে নাম তুলেছেন জেলাপরিষদ সদস্য সঞ্চয় দাস। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই তিনি এসডিও ও বিডিওর কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানান। তিনি বলেন, "কখনওই উনি আমার ছেলে নন। আমার দুই ছেলে ও এক মেয়ে বর্তমান। ওই নামে আমার কোনও ছেলে নেই।" জেলা পরিষদ সদস্য সঞ্চয় দাস অবশ্য গোটা বিষয়টি ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, "বর্তমানে আমার বাবা মৃত। কাকতালীয়ভাবে আমার বাবার নাম আর ওনার নাম একই, বাসুদেব দাস। তাই এই অভিযোগ ভিত্তিহীন। সম্পূর্ণ রাজনৈতিক অভিসন্ধিমূলক এই অভিযোগ। বিজেপির পরিকল্পিত চক্রান্তে এভাবে উনি আমার সম্মান নষ্ট করছেন। আসল সত্য কী, নির্বাচন কমিশন তদন্ত করে দেখুক।"
বিষয়টিকে ইস্যু করে রাজনীতির ময়দানে নেমে পড়েছে বিজেপি। দলের মথুরাপুর সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক শিবপ্রসাদ প্রামাণিক বলেন, "বাসুদেব দাসের অভিযোগ গুরুতর। কমিশন তদন্ত করে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করুক।" এদিকে দু'দিন আগেই এসআইআর-এর কাজ নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মেনে ঠিকঠাক চলছে কিনা দেখতে এসেছিলেন কমিশনের দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিশেষ পর্যবেক্ষক সি মুরুগান। উপস্থিত থাকা বিজেপির বুথ লেভেল এজেন্ট ও অন্যান্য বিরোধীরা বিষয়টি তাঁর কানে তোলেন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযোগ ও অভিযুক্তের পাল্টা দাবির বিষয়ে ইআরও তথা মহকুমাশাসক ও ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের এইআরও-কে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। জানা গিয়েছে, বুথ লেভেল অফিসার বিষয়টি তদন্ত করছেন। তদন্তে অভিযোগের যদি কোনও সারবত্তা থেকে থাকে তবে দু'পক্ষকেই শুনানিতে ডাকা হবে। এমনকী তদন্তে অভিযুক্ত বা অভিযোগকারী যে কেউই দোষী প্রমাণিত হন না কেন, সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
