রাজা দাস, বালুরঘাট: গাঁ-গঞ্জে নয়, খোদ শহরেই কৌশল করে নাবালিকা বিবাহের চেষ্টা! খবর পেয়ে পুলিশ প্রথমে অভিযান চালালেও এমন বেআইনি কাজের প্রমাণ না পেয়ে ফিরে গিয়েছিল। তখন বিয়ের কনে হিসেবে যাকে দেখানো হয়েছিল, সে সাবালিকা, বাড়ির মেজো মেয়ে। কিন্তু অন্যায় যে আড়াল করা মুশকিল! তাই দ্বিতীয়বার তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ বুঝতে পারে, মেজো মেয়েকে কনে সাজিয়ে আসলে নাবালিকা ছোট মেয়ের বিয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। একেবারে হাতেনাতে ধরা পড়ে নাবালিকার বাবা-মা। উদ্ধার করা হয়েছে একাদশ শ্রেণিতে পাঠরত সতেরো বছরের নাবালিকাকে।
কোনও গ্রামে নয়, নাবালিকার বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে বালুরঘাট পুরসভার ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে। এলাকারই এক যুবকের সঙ্গে শুক্রবার রাতে বিয়ে স্থির হয়েছিল ১৭ বছরের নাবালিকার। সে স্থানীয় স্কুলে একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। আইন বর্হিভূত এমন বিয়ের খবর পেয়ে ওই বাড়িতে যান জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষ, পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের লোকজন। কিন্ত পরিবারের লোকজন অভিযানকারীদের চোখে ধুলো দিতে মেজো মেয়েকে কনে সাজিয়ে সামনে নিয়ে আসেন। প্রমাণের অভাবে কার্যত ব্যর্থ হয়েই ফিরে যায় দলটি।
কিন্তু খোঁজখবর জারি ছিল পুলিশের। এবার গোপন সূত্রে খবর পায় যে মেজো মেয়ে নয়, আসলে নাবালিকা ছোট মেয়েকেই বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মেজো মেয়েকে কনে সাজানোটা স্রেফ আইনের চোখে ধুলো দেওয়া। প্রশাসনের শীর্ষস্তরে সেই খবর পৌঁছয়। রাতেই ফের অভিযান চালানো হয় ওই বাড়িতে। এবার হাতেনাতে ধরা পরে যায় নাবালিকার বিয়ের বিষয়টি। সেখান থেকেই উদ্ধার করে মেয়েটিকে মালদহের একটি হোমে পাঠানো হয়েছে। আইন বর্হিভূত এমন পদক্ষেপের বিরুদ্ধে পরিবারকে সতর্ক করা হয়েছে। আর এই ঘটনা স্পষ্ট দেখিয়ে দিল, আইন থাকলেও তার প্রয়োগ যে সর্বত্র ঘটছে, তা নয়। খোদ শহরেই আইনভঙ্গকারীরা রয়েছেন বহাল তবিয়তে। নাবালিকাকে বিয়ে দেওয়ার মানসিকতায় বদল হয়নি বিশেষ।
